সীমান্ত পরিদর্শন করে যা বললেন জেলা প্রশাসক

বান্দরবানের সীমান্ত এলাকা পরির্দশন করছেন জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি ও পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলামসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি ও পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলামসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

আজ সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত তারা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আমরা স্থানীয়দের সে বিষয়ে আশ্বস্ত করেছি।'

এর আগে, জেলা প্রশাসক ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিবর্তে স্থানান্তরিত এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্র কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন এবং ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে জেলা প্রশাসক ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় এবং ঘুমধুম পুলিশ তদন্তকেন্দ্র পরিদর্শনে যান।

সেসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার বিশ্বাস, ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ, নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নান্টু কুমার সাহাসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বান্দরবান সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দেশটির সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে গোলাগুলি চলছে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। এরইমধ্যে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলা বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষে হালকা ও ভারী অস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের শব্দে কম্পিত হচ্ছে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি ও কোনাপাড়াসহ কয়েকটি সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম। এতে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফাটল ধরেছে মাটি দিয়ে তৈরি ঘরের দেয়ালে।

অতি প্রয়োজন ছাড়া এলাকার মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। ইতোমধ্যে ঘুমধুম ইউনিয়নের প্রায় সব স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের স্কুলে শিক্ষা-কার্যক্রম চালু থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। অভিভাবকরাও তাদের যেতে দিচ্ছেন না।

শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে সেজন্য ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্র সরিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে নেওয়া হয়েছে।

ঘুমধুম ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সীমান্তের কাঁটাতারের ৯০০ ফুটের মধ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তার স্বার্থে সম্ভাব্য করণীয় বিষয়ে গতকাল ইউএনও ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আজ জেলা প্রশাসক সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন। আলোচনা সাপেক্ষে তাদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।'

নাইক্ষ্যংছড়ির ইউএনও সালমা ফেরদৌস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সীমান্তে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি বসবাসকারীর নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য করণীয় সম্পর্কে জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে জেনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।'

জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি পরিদর্শনকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীকে জানান, স্থানীয় বাংলাদেশিদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে সম্ভাব্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সেসময় স্থানীয়দের সতর্ক করে তিনি বলেন, 'পারতপক্ষে কেউ সীমান্ত এলাকায় যাবেন না।'

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্থানীয়রা যেন সীমান্ত এলাকায় না যান, সেজন্য প্রতিদিন মাইকিং করা হচ্ছে। তাছাড়া পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা নিয়মিত টহল জোরদার করেছেন।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

9h ago