আফগানিস্তানকে হটিয়ে আফিম উৎপাদনে শীর্ষ স্থান দখল করল মিয়ানমার
আফিম উৎপাদনকারী দেশের তালিকার শীর্ষস্থান দখল করেছে মিয়ানমার। নানা কারণে আফগানিস্তানে আফিমের আবাদ কমে যাওয়ায় মিয়ানমার এই অবস্থানে পৌঁছেছে। আজ মঙ্গলবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বিষয়টি উল্লেখ করেছে।
২০২২ সালে আফগানিস্তানের তালেবান শাসক মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর দেশটিতে আফিম চাষ ৯৫ শতাংশ কমে যায়।
অপরদিকে ২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ কড়ছে। যার ফলে অনেকেই আফিম চাষের দিকে ঝুঁকছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংক্রান্ত কার্যালয় (ইউএনওডিসি)।
ইউএনওডিসির প্রতিবেদন মতে, মিয়ানমারের আফিম চাষীরা এখন অন্য যেকোনো পণ্য চাষের তুলনায় গড়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ বেশি উপার্জন করছেন। দেশটিতে এখন প্রতি কেজি আফিম ৩৫৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে এবং চাষের জমি গত বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেড়ে ৪৭ হাজার হেক্টরে পৌঁছেছে।
যার ফলে, ২০০১ সালের পর দেশটিতে সর্বোচ্চ আফিম উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ইউএনওডিসির আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস জানান, '২০২১ এর ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর অর্থনীতি, সুরক্ষা ও সুশাসনে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। যার ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের চাষীরা জীবিকা অর্জনের জন্য আফিম চাষের দিকে ঝুঁকছেন।'
উত্তরের সীমান্তবর্তী শান, কিন ও কাচিন রাজ্যে আফিম চাষ সবচেয়ে বড় আকারে সম্প্রসারিত হয়েছে।
ইউএনওডিসির প্রতিবেদন মতে, সূক্ষ্ম চাষাবাদের কারণে প্রতি হেক্টরে আফিমের উৎপাদন ১৬ শতাংশ বেড়ে ২২ দশমিক ৯ কেজি হয়েছে।
ডগলাস মত দেন, আগামীতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও দেশটির ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘাত বাড়লে আফিম চাষ আরও দ্রুতগতিতে বাড়বে।
এ বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কাছে মন্তব্য চেয়েও সাড়া পায়নি রয়টার্স।
আফিম চাষের পাশাপাশি মিয়ানমারে উচ্চমাত্রায় অন্যান্য সিনথেটিক মাদক উৎপাদন ও পাচারের অবৈধ কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এ ছাড়া, অর্থ পাচার থেকে শুরু করে অনলাইন জালিয়াতি ও সংঘবদ্ধ অপরাধের প্রবণতাও বাড়ছে দেশটিতে।
Comments