মিয়ানমারে গোলাগুলি: সীমান্ত থেকে ৩০০ পরিবার সরিয়ে নেওয়া হতে পারে

গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে ছোড়া এই মর্টার শেল বাংলাদেশের আধা কিলোমিটার ভেতরে এসে পড়ে। ছবি: পুলিশের সৌজন্যে

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি চলমান থাকায় বান্দরবানের নাইক্ষ‍্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে বসবাসকারী ৩০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

আজ রোববার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।

তবে বৈঠকে জানানো হয়, ঘুমধুম ইউনিয়নে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় পরিবারগুলোকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি কঠিন হয়ে যাবে। এ ছাড়া, স্কুলগুলোতে থাকারও কোনো পরিবেশ নেই।

ফলে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, মিয়ানমারে গোলাগুলির কারণে সীমান্তের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। তীব্র আতঙ্কে সময় পার করছেন সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি ও আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা।

আজ রোববার সকাল ও বিকেলের দিকেও ভারী গুলিবর্ষণের আওয়াজ পেয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা।

তুমব্রু নো-ম্যানস ল্যান্ডে থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রধান (মাঝি) দিল মোহাম্মদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত শুক্রবার রাতে গোলার আঘাতে রোহিঙ্গা শিশু ও কিশোর নিহত হওয়ার পর থেকে স্থানীয় পরিবারগুলো আতঙ্ক-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। আবার গোলা এসে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় অনেকেই রাতে নিরাপদ স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।'

স্থানীয়রা জানান, সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়েছে বিজিবি। স্থানীয়দের ছাড়া বহিরাগতদের সীমান্ত এলাকায় যেতে দিচ্ছেন না তারা। কৃষকরাও ভয়ে সীমান্তের আশপাশের জমিতে যেতে পারছেন না। পাহাড়ের জুম চাষিরাও পড়েছেন বিপাকে।

এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। 

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার দিল মোহাম্মদ ভুট্টো।

মিটিং শেষে তিনি টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রশাসন থেকে সীমান্তের কৃষক ও জুমচাষিদের তালিকা তৈরি করে জমা দিতে এবং স্থানীয়দের সীমান্তে না যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সীমান্তের কাঁটাতার সংলগ্ন তুমব্রু, ঘুমধুম, হেডম‍্যান পাড়া, ফাত্রা ঝিরি ও রেজু আমতলী এলাকায় বসবাসকারী পরিবারের প্রায় দেড় হাজার সদস্যকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে।' 

নাইক্ষ‍্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অ্যালার্ট করা হয়েছে, তারা যেন জনগণকে নিরাপদে থাকার নির্দেশনা দেন।'

'আমাদের আজকের মিটিংয়ে সীমান্তের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের আরও নিরাপদে রাখার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে', যোগ করেন তিনি।

সর্বশেষ নিরাপত্তা পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে দায়িত্বরত বিজিবির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা কেউ ফোন ধরেননি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Power, Energy Sector: Arrears, subsidies weighing down govt

The interim government is struggling to pay the power bill arrears that were caused largely by “unfair” contracts signed between the previous administration and power producers, and rising international fuel prices.

10h ago