কুড়িগ্রামের দেড় হাজার বানভাসি পরিবার পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর দেড় কোটি টাকা
কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দেড় হাজার পরিবার পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে দেওয়া দেড় কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ি মেরামতের জন্য প্রতিটি পরিবার পাবে ১০ হাজার করে টাকা করে।
আজ শনিবার বিকালে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গতকাল শুক্রবার থেকে এ টাকা বিতরণ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় কুড়িগ্রাম ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা, ধরলা ও গঙ্গাধর নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে প্রায় ৮০ হাজার পরিবারের আড়াই লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দেড় হাজারের বেশি পরিবারের বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক পরিবারের ঘর ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। আবার অনেক পরিবারের ঘরের দরজা, বেড়া ও আসবাবপত্র ভেসে গেছে। অনেকে ঘর হারিয়ে সরকারি রাস্তা, পানি উন্নয়নের বাঁধে পলিথিন মোড়ানো ঝুপড়ি তৈরি করে দিন কাটাচ্ছেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে পোড়ার চর এলাকার সোনাভান বেওয়া (৮৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তার ছেলে মিনহাজ উদ্দিনের ৩টি ঘরের ২টিই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া সহায়তার ১০ হাজার টাকা পেলে ঘর ২টি মেরামত করতে পারবেন। ঘর ২টি এখনো মাটির ওপর পড়ে আছে।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরের চর এলাকার আকাম উদ্দিন (৬২) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তার ৩টি ঘর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি ঘর ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। বর্তমানে সরকারি রাস্তার ওপর পলিথিন মোড়ানো ঝুপড়িতে বসবাস করছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া সহায়তার টাকা এখনো পাননি, তবে পাবেন বলে তাকে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। এ টাকা পেলে তিনি ঘরগুলো মেরামত করতে পারবেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের ঘোগাদহ গ্রামের বিমল চন্দ্র দাস বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া সহায়তার ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন। এ টাকা দিয়ে ঘর মেরামতের কাজ শুরু করেছেন।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দেড় হাজার পরিবারের প্রতিটি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই টাকায় বন্যায় ভেঙে যাওয়া ঘর মেরামত করে, শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরণ কিনে, গৃহস্থালি উপকরণ কিনে পরিবারগুলো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।'
'বানভাসি দিনমজুর, দরিদ্র কৃষক, কৃষি শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, বয়স্ক প্রতিবন্ধী, রিকশাচালক, নাপিত, হোটেল শ্রমিক, দোকান কর্মচারি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ফেরিওয়ালাসহ স্বল্প আয়ের মানুষ এই সুবিধা পাচ্ছেন,' তিনি বলেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তালিকা অনুযায়ী অনুদানের এ টাকা বিতরণ করা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসক জানান।
Comments