কুড়িগ্রামে বন্যার পানির নিচে ৬৫০০ হেক্টর জমির ফসল
গত এক সপ্তাহ ধরে কুড়িগ্রামে বন্যার পানির নিচে তলিয়ে আছে সবজি ও আমন বীজতলাসহ ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজি ও আমন বীজতলা। কপম বন্যাদুর্গত এলাকার কৃষকরা বলছেন কৃষি বিভাগের তথ্যের চেয়ে বন্যায় ফসলের ক্ষতির পরিমান তিন গুণ বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বন্যার পানির নিচে তলিয়ে থাকা ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির মধ্যে মরিচ, পটলসহ বিভিন্ন শাক-সবজি রয়েছে ২ হাজার হেক্টর জমিতে, আমন বীজতলা রয়েছে ৫০০ হেক্টর জমিতে আর ৪ হাজার হেক্টর জমিতে রয়েছে পাটসহ অন্যান্য ফসল।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের চর মধ্য কদমতলা গ্রামের কৃষক সুরজামাল মিয়া (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তার তিন বিঘা জমির মরিচ ও পটল খেত বন্যার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চার বিঘা জমির পাটখেতও পানির নিচে। এখনো পাটখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে বন্যার পানি আর কয়েকদিন থাকলে পাটখেতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের কলাতিপাড়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৬৫) বলেন, তিনি ৫ বিঘা জমিতে মরিচ লাগিয়েছিলেন। শুধু ৩০ কেজি মরিচ বিক্রি করেতে পেরেছেন। মরিচ খেত বন্যার পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে খেত। এবছর ৪ লাখ টাকার মরিচ বিক্রির পরিকল্পনা ছিল তার।
চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের জোরগাছ গ্রামের কৃষক সুধীর চন্দ্র দাস (৭০) বলেন, বন্যার পানির নিচে তলিয়ে থাকায় তার ৪০ শতাংশ জমির আমন বীজতলা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পানি নেমে গেলে পুনরায় আমন বীজতলা প্রস্তুত করতে হবে। কবে বন্যার পানি নামবে সেই আশায় দিন গুনছেন।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বন্যার পানির নিচে তলিয়ে থাকা শাক-সবজি ও আমন বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এখনো পাটের কোনো ক্ষতি হয়নি। বন্যার পানি ৩-৪ দিনের মধ্যে নেমে গেলে ফসল কিছুটা রক্ষা হবে। কৃষি বিভাগের লোকজন এখনো মাঠপর্যায়ে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনও কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে উপদ্রুত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে বলেও জানান তিনি। তবে ব্রহ্মপুত্র, ও দুধবুমার নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
Comments