কোয়েলের ডিম কেন খাবেন

কোয়েলের ডিম
ছবি: সংগৃহীত

ডিম একটি আদর্শ খাদ্য। মুরগির ডিম, হাসের ডিমের সাথে কোয়েল পাখির ডিম ও ভীষণ জনপ্রিয়। কোয়েল পাখির ডিম পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ একটি প্রাকৃতিক খাদ্য, যা শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। এটি শিশু থেকে বয়স্ক সবাই খেতে পছন্দ করেন এবং স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। 

আজকে জানব কোয়েলের ডিমের পুষ্টিগুণ। জানিয়েছেন লাইফ ট্রাস্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পুষ্টিবিদ মাহিনুর ফেরদৌস।

তিনি বলেন, কোয়েলের ডিম একটি পুষ্টিকর খাদ্য, যা অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ। এটি সাধারণ ডিমের তুলনায় আকারে ছোট হলেও পুষ্টিগুণে অনন্য। কোয়েলের ডিমে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বিদ্যমান, যা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।

প্রধান পুষ্টি উপাদান

১. প্রোটিন

কোয়েলের ডিম উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম কোয়েলের ডিমে প্রায় ১৩ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা দেহের কোষের গঠন, ক্ষয়পূরণ এবং পেশি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

২. ভিটামিন

কোয়েলের ডিমে ভিটামিন এ, বি২ (রিবোফ্লাভিন), বি৬, বি১২, এবং ডি প্রচুর পরিমাণে থাকে।

ভিটামিন এ: চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং স্নায়ুর স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করে।

ভিটামিন ডি: হাড় মজবুত রাখতে ক্যালসিয়ামের শোষণে সাহায্য করে।

৩. মিনারেলস বা খনিজ

কোয়েলের ডিমে আয়রন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, এবং জিঙ্ক থাকে।

আয়রন: রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে।

ফসফরাস: হাড় ও দাঁতের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ।

পটাসিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

জিঙ্ক: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে।

চর্বি ও ক্যালরি

কোয়েলের ডিমে স্যাচুরেটেড ও আনস্যাচুরেটেড উভয় ধরনের ফ্যাট থাকে। এতে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। প্রতিটি কোয়েলের ডিমে প্রায় ১৪ ক্যালরি থাকে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।

স্বাস্থ্য উপকারিতা

 ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করা

কোয়েলের ডিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন এ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি সর্দি-কাশি, ইনফেকশন ও সাধারণ ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক।

অ্যালার্জি ও প্রদাহ কমানো

কোয়েলের ডিমে ওভোমুকোইড নামে একটি প্রোটিন থাকে, যা অ্যালার্জি প্রতিরোধে কার্যকর। এটি প্রদাহজনিত সমস্যাও হ্রাস করে।

 হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা

এই ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

ত্বক ও চুলের যত্ন

কোয়েলের ডিমে থাকা ভিটামিন এ এবং জিঙ্ক ত্বক উজ্জ্বল রাখে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি

ভিটামিন বি১২ এবং কোলিন মস্তিষ্কের স্মরণশক্তি ও মনোযোগ বাড়াতে কার্যকর। এটি স্নায়ু সুরক্ষা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করে।

খাওয়ার নিয়ম ও সতর্কতা

কোয়েলের ডিম সাধারণত সেদ্ধ, ভাজা বা রান্না করে খাওয়া হয়। ডিম ভাজার সময় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ অতিরিক্ত তেল দিলে ডিমের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। তবে অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এটি অতিরিক্ত কোলেস্টেরল এবং ফ্যাটের কারণে ক্ষতিকর হতে পারে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Polythene ban: A litmus test for will and eco-innovation

Although Bangladesh became the first country in the world to announce a complete ban on the use of polythene bags in 2002, strict enforcement of the much-lauded initiative has only started taking shape recently.

15h ago