যে কারণে গাজর খাবেন
শীতকালের সবজি হলেও এখন সারা বছরই গাজর পাওয়া যায়। এটি একটি পুষ্টিকর সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য উপাদান রয়েছে।
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ফারজানা শারমিন তন্বীর কাছ থেকে জেনে নিন গাজরের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা।
গাজরের পুষ্টি ও উপকারিতা
- গাজরে প্রচুর ভিটামিন এ থাকে। ভিটামিন এ ত্বকের কোষের বৃদ্ধি ও পুনর্জন্মে সাহায্য করে। এটি ত্বকের বলিরেখা, ব্রন, দাগছোপ দূর করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
- গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন থাকে। বিটা ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ চোখের রেটিনায় অবস্থিত রড ও কোন কোষের জন্য অপরিহার্য। এটি চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি, রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধ এবং ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় দ্রুত। গাজর খেলে ত্বকে পটাশিয়ামের অভাব দূর হবে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
- গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- চুল পড়া রোধে গাজরে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল কার্যকর। গাজর চুল পড়া কমায়, চুলকে শক্ত ও মজবুত করে।
- গাজরের থাকা বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।
- গাজর দাঁতের সুরক্ষা দেয়। দাঁত পরিষ্কারক হিসেবে যেমন কাজ করে, তেমনি দাঁতের গোড়ায় ক্যালকুলাস জমতেও বাধা দেয়।
- অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুর জন্য গাজর খুব ভালো সবজি। গাজরের রসে শিশুর জন্ডিস হওয়ার ঝুঁকি কমে।
- যারা দীর্ঘদিন পেটের সমস্যায় ভুগছেন, এবার গাজরে সমাধান খুঁজতে পারেন। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করারও ভালো ওষুধ। গাজরে থাকা ফাইবার হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং পেটের পীড়া কমাতে সাহায্য করে।
- গাজর খেলে পেট ভরবে ঠিকই, আবার বেশি ক্যালরিও যোগ হবে না শরীরে। তাই ওজন কমাতে বেশি বেশি গাজর খেতে পারেন।
- গাজরে থাকা ফাইবার এবং পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- গাজরে থাকা ভিটামিন এ লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি লিভার থেকে টক্সিন দূর করে এবং লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত গাজর খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়। গাজরে ফ্যালকেরিনল এবং ফ্যালকেরিনডায়ল নামক রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা শরীরের অ্যান্টিক্যানসার উপাদানগুলোকে শক্তিশালী করে।
গাজর খাওয়ার কিছু টিপস
- গাজর ভালোভাবে ধুয়ে খাওয়া উচিত।
- কাঁচা খাওয়ার সময় খোসা ছাড়িয়ে নেওয়া উচিত।
- গাজর বেশিক্ষণ রান্না করা উচিত নয়।
- গাজর দিয়ে তৈরি খাবার ঠান্ডা হয়ে গেলে খাওয়া উচিত।
সতর্কতা
- গাজর অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। এতে শরীরে ভিটামিন এ-র মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
- গাজর খেয়ে সূর্যের আলোতে গেলে ত্বক হলুদ হয়ে যেতে পারে। এটি সাময়িক সমস্যা।
Comments