১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংকটি গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ হাজার ১১৫ কোটি টাকার মন্দ ঋণের চাপে আছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের প্রায় ৯৫০ শতাংশ।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকসহ ১০টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে—গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৪ দশমিক আট শতাংশ বা ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা।
‘দুর্ভাগ্যবশত, বড় অংকের এসব খেলাপি ঋণ কমানোর কোনো শর্টকাট নেই। বেশিরভাগ বড় খেলাপিরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।’
এখন পর্যন্ত বকেয়া আমদানি বিল দাঁড়িয়েছে ৪০০ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে সবচেয়ে বেশি বকেয়া আছে।
গত জুন পর্যন্ত ৩০ প্রচলিত ব্যাংক তাদের ৩৩ শাখা ও ৬৮৮ উইন্ডোর মাধ্যমে ইসলামি ব্যাংকিং সেবা দিয়ে এসেছে।
বিদেশি মুদ্রা সংকটের কারণে কাঁচামাল আমদানির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তার জন্য গত বছরের জানুয়ারিতে ১০ হাজার কোটি টাকার ইএফপিএফ চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
‘তারল্য সহায়তার মেয়াদ শেষ হলেও ইসলামী ব্যাংক এখনো পুরো টাকা পরিশোধ করতে পারেনি।’
মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে মুদ্রানীতিতে সুদহার আরও বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সারা বিশ্বে ডিজিটাল ব্যাংকের প্রসার দ্রুত বাড়ছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ৩৫টি এনবিএফআইয়ের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা, যা একই বছরের জুনের চেয়ে ৯ শতাংশ এবং আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত কল মানি রেট তখন বৃদ্ধি পায়, যখন ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়ে ও বাজার থেকে অর্থ ধার করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বছর শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, দেশটির রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা তুলনায় ৫৮ মিলিয়ন ডলার কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ডাটাবেজে মিথ্যা তথ্য জমা দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যেতে পারে।
ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশ ও ভারত গত ১১ জুলাই দুই দেশের বাণিজ্যে রুপি ব্যবহার শুরু করে। কিন্তু, লেনদেনের পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ভারতীয় মুদ্রায় ব্যবসা করায় আগ্রহ কম।
২০১৩ সালের শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৮৯ কোটি টাকা। এক বছর পর তা বেড়ে ৯১০ কোটি টাকা হয়। তখন থেকেই খেলাপির পরিমাণ বাড়তে থাকে বলে ব্যাংকের আর্থিক বিবরণীতে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর সম্মিলিত মূলধন ঘাটতি ছিল ৩৭ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।