নতুন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দুর্বল ব্যাংক খাত

মূল্যস্ফীতি, খাদ্য মূল্যস্ফীতি, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো,
রাজধানীর একটি মুদি দোকানের সাধারণ দৃশ্য। স্টার ফাইল ফটো

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জরুরি কাজ হবে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা ও দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সবল করা।

তারা আরও বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুশাসনের অভাব ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের ঘাটতি অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, বছরের পর বছর ধরে দেশের অর্থনীতি উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে ভুগছে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জরুরি কাজ হওয়া উচিত মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করা।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে, যা ২০১১-১২ সালের পর সর্বোচ্চ, তখন মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, জাতি একটি পরিবর্তন দেখেছে, এখন প্রয়োজন অর্থনীতি পুনর্গঠন করা।

তার মতে, ধ্বংস হওয়া সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি মেরামত করা বড় চ্যালেঞ্জ নয়। বরং দেশের ভাবমূর্তি মেরামতই করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) মহাসচিব সুমন চৌধুরী বলেন, ব্যবসায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় লাগবে।

'অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী পদক্ষেপ নেবে তা স্পষ্ট না হলেও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।'

সুমন চৌধুরী বলেন, 'আন্দোলনে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানির ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এমনিতেই গ্যাস সংকটের কারণে তারা দীর্ঘদিন দুর্ভোগে আছেন।'

তিনি বলেন, এ অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত প্রণোদনা বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া।

বিশেষ করে আওয়ামী লীগপন্থী ব্যবসায়ীদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হামলার নিন্দা জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'এটা সত্য যে, আওয়ামী লীগপন্থী ব্যবসায়ীরা অনেক সুবিধা পেয়েছেন। কিন্তু কার্যত সব ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগপন্থী হয়ে উঠেছেন, কারণ দলটি গত ১৫ বছর ধরে দেশ শাসন করেছে।'

ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি জাভেদ আখতার এ বিষয়ে আগাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে তিনি বলেন, আক্ষরিক ও রূপক উভয় দিক থেকেই জাতির অনেক ক্ষতি হয়েছে।

'তাই আমাদের জাতিকে পুনর্গঠন করতে হবে,' বলেন তিনি।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, যে-ই ক্ষমতায় আসুক না কেন, আমরা ব্যাংকিং খাতে সুশাসন চাই।

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন কোম্পানি ও ব্যাংকগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে।

'রাজনৈতিক নেতাদের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো সমস্যায় পড়লে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Dengue cases see sharp rise in early July

Over 1,160 hospitalised in first 3 days, total cases cross 11,000

8h ago