ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ২৩২০৮ কোটি টাকা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এই পরিস্থিতির জন্য মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক দায়ী। কারণ তারা কঠোরভাবে তদারকি করেনি।
খেলাপি ঋণ, ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক,
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

২০২৩ সাল শেষে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ৩৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ২৩ হাজার ২০৮ কোটি ৭০ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই খাতের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৭৩ হাজার ৫৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বিতরণ করা ঋণের ৩২ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা আর্থিক খাতের ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ ও করপোরেট সুশাসনের অভাব নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তার মধ্যে এই তথ্য সামনে এলো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এই পরিস্থিতির জন্য মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক দায়ী। কারণ তারা কঠোরভাবে তদারকি করেনি।

অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) ভাইস চেয়ারম্যান কান্তি কুমার সাহা বলেন, কয়েক বছর আগে এ খাতে দেখা বড় বড় কেলেঙ্কারি ও অনিয়ম দেখা গেছে। এসব কারণে খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের (বর্তমান নাম গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদার চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। এগুলো হলো- পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, এফএএস ফাইন্যান্স ও বিআইএফসি।

ফলে এই চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, গত এক-দুই বছরের মধ্যে যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে তা নিয়মিত।

'এখন, বেশিরভাগ ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আরও ভালো করার চেষ্টা করছে। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে আমরা জনশক্তি তৈরির চেষ্টা করছি।'

বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান মো. গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়া বলেন, 'শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়, পুরো অর্থনীতি এখন নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এ কারণে এ খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে।'

তিনি বলেন, '২০২২ সালে ঋণ পরিশোধের জন্য মহামারির সময় দেওয়া বিশেষ সুবিধা প্রত্যাহারের পর খেলাপি ঋণ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।'

এদিকে এ খাতের আস্থা সংকটের কারণে জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ৪৪ হাজার ৩০৪ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। এর আগের প্রান্তিকে যা ছিল ৪৪ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা।

Comments