ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় জেলায় জলোচ্ছ্বাস, সারা দেশে বৃষ্টিপাত

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের নয়টি গ্রামসহ ১৪টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। ছবি: স্টার

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল গতকাল রোববার রাতে উপকূলে আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসেরও সৃষ্টি হয়।

রিমালের প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশেই দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে।

আজ সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মোংলার দক্ষিণপশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করেছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

এ ছাড়া, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে নয় নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো এই মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে চার নম্বর নৌ-মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা হাওয়াসহ ভারী (প্রতি ঘণ্টায় ৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (প্রতি ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে।

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ থাকে প্রতি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বাতাসের গতি ৮৯ থেকে ১১৮ কিলোমিটার থাকলে প্রবল, ১১৯ থেকে ২১৯ পর্যন্ত অতি প্রবল এবং বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের বেশি থাকলে সুপার সাইক্লোন বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা ঠিক যে, ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে ওঠার সময় এবং পরবর্তীতে বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়। তবে রিমাল এখন পর্যন্ত শক্তিমাত্রা ধরে রেখেই উপকূল অতিক্রম করছে। আমরা আশঙ্কা করছি, এই ঝড়টি শক্তিমাত্রা ধরে রেখেই উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।'

তিনি বলেন, 'রিমাল ক্রমাগত দুর্বল হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এরপর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং দেশের উত্তর দিকে এগোতে থাকবে। স্থল নিম্নচাপ হওয়ার পরে আবদ্ধ হয়ে পড়লে ২৮ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হতে পারে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

9h ago