আইসিজেতে সমর্থন করায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞ: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সাম্প্রতিক রায় দীর্ঘ ৭৫ বছরের সংগ্রামের পর ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন হওয়ার আশাবাদের অনুভূতি দেয়।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিক্যাব টক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'এগিয়ে যাওয়ার এটিই প্রথম ধাপ। আমরা এর ওপর ভিত্তি করে কাজ করতে পারি।'
রাষ্ট্রদূত বলেন, আইসিজেতে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা গণহত্যা মামলায় সমর্থনের জন্য তারা বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ।
আইসিজে তার রায়ে ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৮ অক্টোবর থেকে হামাসের হামলায় প্রায় ২৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের যুগান্তকারী এই রায় গাজার বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় আশার আলো দেখাচ্ছে। ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়, ধ্বংসযজ্ঞ, গণহত্যার শিকার এবং আহত হওয়া পাশাপাশি অপূরণীয় মানসিক আঘাত সহ্য করছে গাজাবাসী।
তারা আরও বলেন, 'এই রায় ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়বিচারের জন্য কয়েক দশকের দীর্ঘ সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।'
'আমাদের শুধু এখানেই থেমে যাওয়া উচিত নয়। আমরা আইসিজেকে প্রমাণ দিতে চাই যে ইসরাইল গণহত্যা চালিয়েছে। এটা আমাদের কর্তব্য। এটা সবার কর্তব্য।'
রামাদান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ধীরে ধীরে ইসরাইলকে পরিত্যাগ করছে, যারা এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র শক্তিশালী হওয়ার কারণে দায়মুক্তি ভোগ করে আসছে।
গত ৩০ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার মুহূর্তটি সামনে আনতে ব্রিটেন প্রস্তুত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সবার আগে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত ছিল, কারণ ফিলিস্তিনের সব সমস্যা ব্রিটিশ নীতির কারণে সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সমাধান বের করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন, তবে এটি আরও আগেই করা উচিত ছিল।
রাষ্ট্রদূত রামাদান বলেন, ইসরাইল শক্তিশালী হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিন ইস্যুকে উপেক্ষা করে আসছে।
'ইসরাইল আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কিন্তু এর পাশে দাঁড়ানো দেশগুলো কারা? শক্তিশালী দেশগুলো,' বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এটি একটি মিথ যে সেরা অস্ত্র ও প্রশিক্ষণে সজ্জিত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে কেউ পরাজিত করতে পারে না, তবে হামাস এটিকে ভুল প্রমাণ করেছে।
৭ অক্টোবরের হামলার পর হামাস এর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কী ভাবছে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত রামাদান বলেন, তিনি হামাস বা ফাত্তাহকে প্রতিনিধিত্ব করেন না, বরং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধিত্ব করেন।
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যের অভাব নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।
Comments