এই শীতে রেঁধে ফেলুন ফুলকপির রোস্ট

phulkopi
ফুলকপি রোস্ট। ছবি: সংগৃহীত

চলে এসেছে হাড় কনকনে শীত, আর সেইসঙ্গে বাজারে দারুণ সব শীতের সবজিও। এর মধ্যে ফুলকপি আমাদের সবার কাছেই সহজ ও সুস্বাদু রান্নার উপাদান হিসেবে খুব প্রিয়।

ফুলকপি ভাজি, বেসন আর চালের গুঁড়ো দিয়ে ডুমো ডুমো ফুলকপি বড়া কিংবা টাটকা মাছের ঝোলে টুপ করে কয়েক টুকরো ফুলকপি দিয়ে দেওয়া—বাঙালি রান্নাঘরে এমনতর মেনু হরহামেশাই দেখা যায়। আজকের এই রেসিপিতেও থাকছে ফুলকপি, কিন্তু একটু অন্যভাবে। বিয়েবাড়িতে বসে কবজি ডুবিয়ে রোস্ট খেতে ভালোবাসলে, একটু বাজেটবান্ধব উপায়ে এই মেনুটাও পছন্দ হওয়ার কথা। রান্নাবান্নার এই আলাপে থাকছে ফুলকপির রোস্ট বানানোর সহজ উপায়।

যা যা লাগবে

● ১টি মাঝারি আকারের ফুলকপি, বড় বড় ৪-৫টি টুকরো করে নিতে হবে।

● ছোট ১ টুকরো আদা

● ১টি বড় পেঁয়াজ বা ২টি ছোট পেঁয়াজ

● ৩টি কাঁচামরিচ

● ৮-১০টি বাদাম (কাজু হলে ভালো হয়, তবে চিনাবাদাম নিলেও কাজ চলবে)

● আধা কাপ টক দই

● ১ চা-চামচ পরিমাণ জিরা, ধনিয়া, মরিচ গুঁড়া

● আধা চা-চামচ পরিমাণ গরম মশলার গুঁড়া

● ১ চামচ ঘি

● পরিমাণমতো সর্ষের তেল

● পরিমাণমতো চিনি ও লবণ

রান্নার ধাপ

ফুলকপির টুকরোগুলো রান্নার আগে একটু সেদ্ধ করে নিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে অতিরিক্ত সেদ্ধ না হয়ে যায়, তাহলে আবার রোস্টের জায়গায় ফুলকপি ভর্তা হওয়ার আশঙ্কাই বেশি! হালকা শক্ত থাকবে কিন্তু রংটা একটু পালটে যাবে, এমনভাবে সেদ্ধ করতে হবে।

এরপর মশলা তৈরির পালা। প্রথমেই বাদামটা মিহি করে বেটে নিয়ে আলাদা রেখে দিতে হবে। বাদাম পেস্ট করলে রোস্টে একটা মাখো মাখো ভাব আসে, স্বাদটাও হয় দারুণ। এরপর একসঙ্গে পেঁয়াজ, আদা, কাঁচামরিচও বেটে নিতে হবে।

লবণ, টক দই, বাদাম বাটা ও অন্যান্য গুঁড়ো মশলাসহ সেদ্ধ করে রাখা ফুলকপির টুকরোগুলো মাখিয়ে নেওয়ার পর আধাঘণ্টার জন্য মেরিনেটেড অবস্থায় একটি পাত্রে ঢেকে রেখে দিতে হবে। এতে করে ফুলকপি আর মশলার বন্ধুত্ব জমবে ভালো।

কড়াই বা ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে নিতে হবে। এতে একসঙ্গে তেল ও ঘি গরম করে নিতে হবে। গরম ঘি ও তেলের মিশ্রণে মাঝারি আঁচে আদা, পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ কষিয়ে নিতে হবে। কষানো হলে একটু তেল ছেড়ে আসবে। মশলাগুলো আলাদা আলাদা দেখা যাবে। তখনই মেরিনেট করা ফুলকপিগুলো এক এক করে দিয়ে দিতে হবে। একটু নাড়াচাড়া করে ঢেকে রাখতে হবে ৭-৮ মিনিট। মাখো মাখো ভাব চলে আসলে একটুখানি চিনি আর গরম মশলা গুঁড়ো ছিটিয়ে দিতে হবে। আধা মিনিট পর চিনি গলে গেলেই পুরোদস্তুর তৈরি হয়ে যাবে ফুলকপির রোস্ট।

রোস্টের সঙ্গের ঘন গ্রেভিটা গরম ভাত দিয়ে মেখে খেতে দারুণ লাগবে। ঘিয়ের গন্ধে ম ম করবে চারপাশ। একইভাবে ফুলকপি খেতে খেতে যারা ক্লান্ত, তারা ভাত বা পোলাওয়ের সঙ্গে এই রেসিপিটা চেষ্টা করে দেখতে পারেন। যারা খুব একটা শাকসবজি খান না, তাদের জন্যও দারুণ হবে এই রেসিপি। তারা সবজিতেই পেয়ে যাবেন একেবারে মাংসের স্বাদ!

রাঁধুনির সতর্কতা

এই রান্নাটি করার সময় কিছু বিষয়ে সতর্ক না থাকলে কিন্তু বিগড়ে যেতে পারে খাবারের স্বাদ। অতএব রাঁধুনি, সাবধান! প্রথমেই যেমনটা বলা হয়েছে, ফুলকপি যেন অতিরিক্ত সেদ্ধ না হয়। তবে তাই বলে কাঁচাভাবও রাখা যাবে না। রোস্টের স্বাদ যাতে ঠিকঠাক আসে, সেজন্য গ্রেভিটা অবশ্যই মাখো মাখো হতে হবে। ঝোল ঝোল ভাব কিংবা একেবারে কড়কড়ে শুকনো করে ফেলা যাবে না। এ ছাড়া মশলা কষানোর সময় আগুনের আঁচ মাঝারি রাখতে হবে, আগুন অনেক বেশি বেড়ে গেলে মশলা পুড়ে যাবে। পোড়া ভাবটা এ রান্নায় একদম পোষাবে না। সব ঠিকঠাক রেখে রান্না করতে পারলে এই নিরামিষ পদটি সহজেই ছাড়িয়ে যাবে খাদ্যতালিকার আমিষ পদকে। ফুলকপি দিয়ে কিন্তু রোস্টের মতোই কিছু মিল রেখে রান্না করা যেতে পারে ফুলকপির কোরমা। সে পদ নিয়ে না হয় অন্য কোনোদিন গল্প হবে। আপাতত উনুনে চড়ুক ফুলকপির রোস্ট।

Comments

The Daily Star  | English

Over 102,000 annual deaths in Bangladesh linked to air pollution

Study also finds air pollution behind 266 million sick days every year hurting the economy

1h ago