‘সাদার চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি’

রঙিন ফুলকপি। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফলতা পেয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। ভালো ফলনের পাশাপাশি ফুলকপির ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে।

ফলে রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন স্থানীয় সবজি চাষিরা। রঙিন ফুলকপির সাফল্যে খুশি স্থানীয় কৃষি বিভাগও।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে আগেই রঙিন ফুলকপি চাষ শুরু হয়েছে। তবে টাঙ্গাইলে এবারই প্রথম চাষ হচ্ছে।

ভারত থেকে আনা এই ফুলকপির বীজ থেকে উৎপন্ন ৪০০ চারা ভূঞাপুর উপজেলার ছাব্বিশা গ্রামের সবজি চাষি আরশেদ আলীর ১৫ শতাংশ জমিতে চাষ করা হয়।

চারা ছাড়াও ফুলকপি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জৈব সার, কীটনাশক ও পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছে কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, চারা রোপণের পর থেকে আড়াই মাসের (৮০ দিনের) মধ্যে জমি থেকে ফসল তোলা যাচ্ছে। এই ফুলকপি চাষে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে না।

কৃষক আরশেদ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিজ বাড়ির আঙিনার এক বিঘা জমিতে প্রতি বছর নানান সবজি চাষ করি। এবার স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে জমির অর্ধেকাংশে পরীক্ষামূলকভাবে হলুদ ও গোলাপি রঙের ফুলকপি চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি।'

'এলাকার মানুষ আগ্রহী হয়ে ভালো দাম দিয়ে খেত থেকেই এই ফুলকপি কিনে নিচ্ছেন। বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব রঙিন ফুলকপি। মাঝারি আকৃতির একেকটি ফুলকপি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।

টাঙ্গাইলে প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক আরশেদ আলী। ছবি: মির্জা শাকিল/স্টার

ভালো ফলন ও সাধারণ ফুলকপির চেয়ে বেশি দাম পাওয়ায় উৎসাহী হয়ে আগামী মৌসুমে পুরো জমিতেই এই রঙিন ফুলকপি চাষ করার আশা করছেন আরশেদ আলী।

এ দিকে প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষে আরশেদ আলীর সাফল্য স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

তার এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন কৃষকসহ উৎসুক মানুষ। তাদের কেউ ফুলকপি কিনছেন, কেউ চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।

একই গ্রামের আরেক কৃষক মোহাম্মদ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আরশেদ আলীর রঙিন ফুলকপি দেখেছি। এর চাষপদ্ধতি সম্পর্কে তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়েছি। আগামীতে আমিও এই রঙিন ফুলকপি চাষ করব আশা করছি।'

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্বাদ কেমন তা দেখতে জমি থেকেই ৫০ টাকা দিয়ে একটি হলুদ রঙের ফুলকপি কিনেছি।'

ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ড. হুমায়ূন কবীর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃহত্তর ময়মনসিংহে ফসলের নিবিড়তা বাড়ানোর প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলে এই প্রথম রঙিন ফুলকপি পরীক্ষামূলকভাবে চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথমে কেউ আগ্রহ দেখাননি। পরে কৃষক আরশেদ আলী আগ্রহ দেখালে তাকে কৃষি অফিস থেকে ফুলকপির চারা, জৈব সার, কীটনাশক ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে।'

'এটি স্থানীয় মাটি ও আবহাওয়ায় চাষে কতটা উপযোগী বা কেমন ফলন হয় আমরা দেখতে চেয়েছি। আমরা সফল হয়েছি,' বলেন তিনি।

তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়া ও চীনসহ অন্যান্য দেশে এ জাতের ফুলকপি সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও সুন্দর।

তার মতে, সাধারণ ফুলকপি চাষের যে পদ্ধতি ওই একই পদ্ধতিতে রঙিন ফুলকপি চাষ হয়। খরচ ও পরিশ্রম একই। শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এই ফুলকপি চাষ করা যায়।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

5h ago