উত্তর কোরিয়ার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। ছবি: কেসিএনএ

এক দিনে পরপর ৮টি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। এটিই সম্ভবত দেশটির সবচেয়ে বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা।

আজ রোববার সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলে সমুদ্রের দিকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া হয়।

এতে আরও বলা হয়, গতকাল শনিবার দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার একদিন পর এ পরীক্ষা চালালো কিম জং উনের দেশ। সামরিক মহড়ায় প্রায় ৪ বছর পর মার্কিন উড়োজাহাজবহনকারী রণতরী অংশ নেয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ গণমাধ্যমকে জানান, উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের সুনান এলাকা থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া হয়। সেগুলো ১১০ কিলোমিটার থেকে ৬০০ কিলোমিটার (৭০ থেকে ৩৭০ মেইল) পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করেছে এবং সে সময় ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ২৫ কিলোমিটার থেকে ৯০ কিলোমিটার উচ্চতা বজায় রাখে।

এর প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) বৈঠক ডেকে দক্ষিণ কোরিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল তার দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও প্রবল প্রতিরোধ ও সমন্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নির্দেশ দেন।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এনএসসি বৈঠকের আলোচনায় সবাই একমত হন যে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া সিউলের নতুন প্রশাসনের নিরাপত্তা প্রস্তুতির পরীক্ষা নিয়েছে। তারা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে।

জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নোবুও কিশি গণমাধ্যমকে বলেন, 'উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।'

যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কমান্ড জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ঘটনায় তাদের 'অবৈধ' অস্ত্র প্রকল্পের অস্থিতিশীল প্রভাব সবার সামনে উন্মোচিত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এ মুহূর্তে কোনো ঝুঁকি নেই।

উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কারণে গত সপ্তাহে দেশটির ওপর আরও বেশি বিধিনিষেধ আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র। তবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে উত্থাপিত এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দেয় চীন ও রাশিয়া।

২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর থেকে উত্তর কোরিয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছে জাতিসংঘ। তবে এবারই উত্তর কোরিয়াকে শাস্তি দেওয়া প্রসঙ্গে স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে প্রকাশ্যে মতবিরোধ দেখা দিলো।

চলতি বছরে উত্তর কোরিয়া বিভিন্ন পাল্লার বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। এর মধ্যে আছে সবচেয়ে বড় আকারের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষা।

গতকাল দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ৩ দিনব্যাপী যৌথ মহড়া শেষ হয়। মহড়াটি আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায়, জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপের কাছাকাছি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উড়োজাহাজ হামলা প্রতিরক্ষা, জাহাজ ও সাবমেরিন হামলা প্রতিরোধসহ অন্যান্য কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত ছিল।

অন্যান্য রণতরীর পাশাপাশি এতে ১ লাখ টন ধারণ ক্ষমতার পারমাণবিক শক্তিতে চালিত উড়োজাহাজ বহনকারী রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান অংশ নেয়।

১ লাখ টন ধারণ ক্ষমতার পারমাণবিক শক্তিতে চালিত উড়োজাহাজ বহনকারী রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান। ছবি: দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফস

এর আগে, উত্তর কোরিয়া এ ধরনের যৌথ মহড়ার সমালোচনা করে। একে তারা ওয়াশিংটনের ধারাবাহিক 'বৈরি নীতির' অংশ বলে আখ্যা দেয়।

 

Comments

The Daily Star  | English

Why Dhaka has become unliveable

To survive Dhaka, you need a strategy. Start by embracing the absurd: treat every crisis as a plot twist.

11h ago