‘কার্যকর এভিয়েশন সেক্টর ছাড়া আঞ্চলিক হাব হতে পারবে না বাংলাদেশ’

এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম বিষয়ক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ‘প্রসপেক্ট অব বাংলাদেশ এভিয়েশন হাব’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি: সংগৃহীত

দেশে কার্যকর এভিয়েশন সেক্টর ছাড়া বাংলাদেশ আঞ্চলিক এভিয়েশন হাব হতে পারবে না বলে জানিয়েছেন উড়োজাহাজ অপারেটর মালিক ও বিশেষজ্ঞরা।

আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সেমিনারে তারা বলেন, অতি উচ্চ হারে জেট ফুয়েলের নিয়মিত দাম বৃদ্ধি, খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে বিশাল বাধা, অতিরিক্ত শুল্ক এবং বিভিন্ন অংশে কর আরোপের মতো কয়েকটি প্রধান কারণে দেশের বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা টিকে থাকতে পারছে না।

এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম বিষয়ক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন বাংলাদেশ মনিটর 'প্রসপেক্ট অব বাংলাদেশ এভিয়েশন হাব' শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (প্রশাসন ও মানব সম্পদ, বিপণন ও বিক্রয়) জাহিদ হোসাইন এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম নজরুল ইসলাম আলোচনায় অংশ নেন।

অংশগ্রহণকারীরা মূলত বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের উন্নয়নে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও সুযোগ-সুবিধা এবং বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক এভিয়েশন হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেন।

নভোএয়ারের এমডি মফিজুর রহমান বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে অভ্যন্তরীণ খাতে যাত্রী সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ লাখ এবং ২০১৯ সালে যাত্রী সংখ্যা ৩০ লাখে উন্নীত হয়।

তিনি বলেন, যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির হারের জন্য বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা অবদান রেখেছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে দেশের বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা শক্ত অবস্থানে দাঁড়াতে পারেনি। এর মূল কারণ জেট ফুয়েলের উচ্চ হার, খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে বিশাল বাধা, বিভিন্ন অংশে অত্যধিক শুল্ক এবং কর।

তিনি আরও বলেন, বিমান ও বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থার মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা এবং সরকার কর্তৃক জাতীয় বিমান সংস্থার প্রতি অযৌক্তিক পক্ষপাতিত্বও বেসরকারি এভিয়েশন খাত টিকতে না পারার আরেকটি কারণ।

এ প্রসঙ্গে নভোএয়ায়ের এমডি জিএমজি, ইউনাইটেড এবং রিজেন্ট এয়ারলাইনস বন্ধের উদাহরণ দেন।

তিনি যাত্রীদের উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন 'বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট অথরিটি' গঠনের জোরালো দাবি জানান।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভারতে ৮০টি আসনবিশিষ্ট উড়োজাহাজের জন্য কোনো ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জ নেই, অথচ আমাদের দেশে প্রতি বছর ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জ বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, ভারতে একটি এটিআর উড়োজাহাজ কিনতে ২০ মিলিয়ন টাকা লাগে এবং বাংলাদেশে একই ধরনের উড়োজাহাজ কিনতে ২২ মিলিয়ন টাকা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আপনি যদি ওই বিমানগুলো ইজারায় আনতে চান, তাহলে খরচ আরও বেশি।

বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে নিম্নমানের সেবার করুণ অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দরকার ডেডিকেটেড ইমিগ্রেশন পুলিশ।

সিএএবি'র চেয়ারম্যান মূল প্রবন্ধে এমন পরিসংখ্যান তুলে ধরেন যা দেশের উড়োজাহাজ খাতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখায়।

তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারণে প্রতি বছর দেশে যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে, যা দেখায় যে এই খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক বেশি।

সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান স্বীকার করেন যে, বিমান এবং বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থার মধ্যে বৈষম্য দূর হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম সেমিনারটি পরিচালনা করেন।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

7h ago