বন্ধ হচ্ছে জিনাত বুক ডিপো

কেন বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে যায় 

উন্নয়নের দেশে কিসের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় বইয়ের দোকান? এর মধ্য দিয়ে কী বার্তা দেয়, সেটা কখনো কি জানার ও ভাবার চেষ্টা করেছি? ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠান, সমাজ থেকে রাষ্ট্র, কোনো পর্যায়ে এসব নিয়ে ভাবান্তর সদর্থক অর্থে দৃশ্যমান হয়নি। এসবের পেছেন কারণ কি একটাই জাতি হিসেবে আমরা বই বিমুখ! যদি এই অভিযোগ সত্য হলে, তাহলে তো পাল্টা প্রশ্নও করা যায়, এর থেকে উত্তরণের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই কেন? দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হচ্ছে যখন, সে সময়ে বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার অপসংস্কৃতিতে স্পষ্ট হয় আমরা কাঠামোগত উন্নয়নে যতটা আন্তরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্টোপথে ও জ্ঞানচর্চার মূলস্রোত থেকে অনেক দূরে।

কথাগুলো এসেছে জিনাত বুক ডিপো প্রসঙ্গে। আজ বন্ধ হচ্ছে অর্থাৎ অতীত হয়ে যাচ্ছে জিনাত বুক ডিপো। ছয় দশক বয়সী একটা প্রতিষ্ঠান ৩০ এপ্রিলের পর হয়ে যাবে কেবলই স্মৃতি, কালের সাক্ষী, অতীতের হিরন্ময় এক অধ্যায়। এই অতীত সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, 'হে অতীত তুমি ভুবনে ভুবনে কাজ করে যাও গোপনে গোপনে।' অমর্ত্য সেন মনে করেন, মানুষ মূলত বাস করে অতীতে। যে জাতির অতীত যত সমৃদ্ধ ও দীর্ঘ কালব্যাপী, তার বর্তমান তত বেশি সমৃদ্ধ। অতীত আলগোছে বর্তমানকে বেঁচে থাকার অক্সিজেন যোগায়। জিনাত বুক ডিপোও ঠিক তেমনভাবে এই শহরের-এদেশের বইসুহৃদ মানুষকে বুদ্ধিবৃত্তিক অক্সিজেন সরবরাহের দায়িত্ব পালন করেছে। অথচ তাকেও বাঁচিয়ে রাখা গেল না। জিনাত বুক ডিপোর হারিয়ে যাওয়া কি আমাদের পরাজয় নয়? কেননা, জিনাতের মৃত্যু মানে আমাদের ছয় দশকের বই সংস্কৃতির গল্পগুলো হারিয়ে যাওয়ার পরিখা বিশেষ।

জিনাত বুক ডিপো বন্ধ হওয়ার মধ্যে দিয়ে রাজধানীবাসীর বই সংস্কৃতির একটা উজ্জ্বলতম অধ্যায়ের সমাপ্তি হতে যাচ্ছে। এই সংস্কৃতির মধ্যে ছিল ঢাকাবাসীর ইতিহাস-ঐতিহ্য, মন ও মননের সামগ্রিক চালচিত্র। যা সকলের জন্য সবিশেষ গর্ব ও গৌরবের। অথচ জিনাত বুক ডিপো রক্ষায়, তার স্বাভাবিক প্রবহমানতা ধরে রাখার জন্য কোনপ্রকার উদ্যোগ নেয়া হল না। ব্যক্তি, বেসরকারি ও সরকারি কোনদিকে থেকেই জিনাতের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার কোন প্রচেষ্টায় গৃহীত হলো না। এর মধ্যে দিয়ে এটাই কি স্পষ্ট হয় যে, আমরা বইয়ের মতো সুন্দরতম জিনিসকে ধরে রাখার জন্য যে প্রত্যয় ও মননের সমৃদ্ধ দরকার সেটার চর্যা ও বিকাশ ঘটাতে পারিনি।

জিনাত বুক ডিপো এখানে একটা প্রতীক বিশেষ। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের বই প্রীতি-প্রেম, সংস্কৃতি ও রুচিরযোগ। কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পেছনে উল্লেখযোগ্য কারণ হল- এক. মানুষের পাঠাভ্যাস কমে গেছে। দুই. বইয়ের পাইরেসী বেড়েছে। তিন. বইয়ের ক্রেতারা এখন অনলাইনে বই কেনায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে। চার. প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বয়স হয়েছে উনারা এই সময়ের চ্যালেঞ্জের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছেন না। পাঁচ. প্রতিষ্ঠানের হাল ধরার মতো মালিকপক্ষের পরিবারে আগ্রহী কেউ নেই। এসব কারণ নিয়ে কোন তর্কের অবকাশ আছে কি না সেটা সম্পূর্ণ পৃথক বিষয়। বরং আমরা ধরে নিতে পারি কারণগুলো যথার্থ ও যৌক্তিক।

প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিই গড়ে তোলে সেটাই সাধারণ রীতি ও নীতি। কিন্তু একটা পর্যায়ে গিয়ে সেই প্রতিষ্ঠান আর ব্যক্তির থাকে না। সেটা সকলের ভাললাগা ও ভালোবাসার সম্পদে পরিণত হয়।  এভাবেই ব্যক্তির সম্পত্তি পরিণত হয় সকলের সম্পদে। একারণে, একশ বছর পেরোনো কোন ইমারত-স্থাপনাকে রাষ্ট্র তার গুরুত্বের নিরীখে প্রত্নসম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে। প্রয়োজনে ব্যক্তির থেকে সেটা বাজার মূল্যে কিনে নেয়া হয়, কিন্তু তার অস্তিত্ব রক্ষা করা হয়। কারণ তার সঙ্গে জনসংস্কৃতি ও জনইতিহাস যুক্ত হয়ে সেটা দেশ ও জাতির ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠে। জিনাত বুকও তেমনটাই হয়ে উঠেছিল, কিন্তু তাকে রক্ষা করার জন্য নেয়া হল না কোন উদ্যোগ। একটা জনঐতিহ্যের এরকম যবনিকাপাত আমাদের ঐতিহ্যপ্রীতির সংকটকেই কি গভীরভাবে রেখাপাত করলো?

জিনাতের জন্ম পাকিস্তান আমলে, যখন খুব করে আলোচিত ছিল বাইশ পরিবারের ধনী শ্রেণীর লুটপাট ও ব্যবসার নামে দুর্বৃত্তপনার কাহিনী। বাইশ থেকে সংখ্যাটা এখন হাজারে, কিংবা লাখে হলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। আশ্চর্য হওয়ার এই যে, এইসব পরিবারের কাছে যে ধরনের দেশপ্রেম প্রত্যাশিত ছিল, সেটা পাওয়া যায়নি স্বাধীন বাংলাদেশে। পাকিস্তান আমলে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান অভিযোগ ছিল এদেশের অর্থ সম্পদ সেদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ছয় এর দশকে তার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে সভা সেমিনার ও পত্র পত্রিকায় বিশদ আকারে কেবল উপস্থাপিত হয়নি, পোস্টার পর্যন্ত করা হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। বর্তমানে ফি বছর অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু সেটা বন্ধ করার দৃশ্যমান উদ্যোগ যেমন নেই , তেমনি এ কারণে শাস্তি নিশ্চিতেরও নজির তেমনটা নেই। সর্বনাশের কথা হল, কয়েক দশক ধরে কেবল টাকা পাচার হয়নি। টাকা পাচারের সঙ্গে আমাদের মনও পাচার হয়ে গেছে। আমাদের শুভবোধ, আমাদের মঙ্গলাকাঙ্ক্ষা ও দেশহিতৈষী চেতনাও লুপ্ত হয়ে গেছে। জিনাত বুক ডিপোর আনুষ্ঠানিক যবনিকাপাতের ঘটনায় সেটা বোধ করি অনেক বেশি খোলতাইরূপে দৃশ্যমান হল।

দেশে প্রতিবছর বইমেলা হয়, প্রায় অর্ধশতাব্দ বয়সী এই মেলাকে এখনও আন্তর্জাতিকতায় রূপ দেয়া সম্ভব হয়নি, কিংবা ইচ্ছে করেই দেয়া হয়নি। প্রতি বছরের বইমেলায় যে পরিমাণ বই প্রকাশিত হয়, তাতে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা যেতেই পারে। সেই বিচারে হয়তো অচিরেই আমরা বিশ্বে এক মেলায় সর্বাধিক বই প্রকাশের রেকর্ডধারী হয়েও উঠতে পারি। কিন্তু এসব বই কতোটা মননসমৃদ্ধ আর কতোটা আবর্জনা উৎপাদক সেটা নিয়ে কোন হেলদোল নেই। গুণীজনরা বলেন, 'অমঙ্গলকে জগৎ হইতে উড়িয়া দেবার চেষ্টা করিও না, তাহা হইলে মঙ্গল সমেত উড়িয়া যাইবে।' 

কথা সত্য, এ নিয়ে বিতর্কেরও অবকাশ নেই। কিন্তু মঙ্গলের চেয়ে যদি অমঙ্গলের পাল্লা ভারী হয়ে যায়, অমঙ্গলের তাপে-চাপে ও দাপটে যদি মঙ্গলের চিড়ে চ্যাপ্টা দশা হয়, অমঙ্গল যদি মঙ্গলকেই বিদায় করে দিতে উদ্যত হয় কিংবা গ্রাস করে নিতে চায়, তা হলে বিষয়টা গভীরভাবে ভাবনার দাবি রাখে বৈকি। কিন্তু সেই ভাবনার যুৎসই কোন উদ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কোন প্রচেষ্টা কোথাও দেখা যাচ্ছে কি? জিনাত বুক ডিপো বন্ধ হওয়ার মধ্যে দিয়ে দেশের বই সংস্কৃতির গতিপ্রকৃতির একটা চিত্র যেমন পাওয়া গেল তেমনি এটাও পরিস্কার হল যে, দেশ থেকে অর্থ পাচারের সঙ্গে আমাদের মনও পাচার হয়ে গেছে কিংবা একদিকে অর্থ পাচার হয়েছে অন্যদিকে আমাদের মনও মরে গেছে আমরা কেবল ঠুঁটো জগন্নাথের ধর্ম পালন করে চলেছি।

জিনাত বুক ডিপো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এ নিয়ে পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব তথ্য হাজির হয়েছে সেটা পাঠ করে এবং স্মৃতিচারণের মধ্যে দিয়েই নিজেদের দায় ও দায়িত্বের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করছি। কিন্তু এটা রক্ষা করা দরকার কি না, কোনভাবে এরকম একটা প্রতিষ্ঠানকে বাঁচিয়ে রাখা যেত কি না, সেসব নিয়ে কোথাও কোন উচ্চারণ নেই। অথচ আমাদের নিজেদের স্বার্থে, বই সংস্কৃতির ঐতিহ্য ধরে রাখা কেবল জরুরি নয়, অপরিহার্যও বটে। কেন অপরিহার্য? কারণ এর ভেতর দিয়ে আমাদের বই পাঠের কয়েক দশকের গল্পগুলো বেঁচে থাকার সুযোগ পেত। আমাদের বই সংস্কৃতির অন্যতম এক ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান গুলিস্তানের ম্যারিয়েটাকে হারিয়েছি, এবার হারাতে যাচ্ছি জিনাতকে, তারপর হয়তো হারাব আজিজ সুপার মার্কেটের বইবান্ধব পরিবেশকে, যা ইতোমধ্যে রুগ্ন হতে হতে হাড় জিরজিরে অবস্থায় পরিগণিত হয়েছে।

কেন একটা পুরনো গাছ, একটা দীঘি, একটা পুকুর, একটা হাট, একটা গঞ্জকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়, কেন এগুলো যদি প্রাকৃতিক কারণে শেষও হয়ে যায় এদের স্মৃতিচিহ্নকে যে কোন উপায়ে ধরে রাখতে হয়, তার কারণ এর সঙ্গে আমাদের অতীত বর্তমানে হাজির থাকে নানা রংয়ে-নানা বর্ণে। এগুলো হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে তার সঙ্গে স্মৃতি-বিজড়িত সবকিছুই আমাদের করোটি থেকে লয়প্রাপ্ত হয়। যে কারণে মানুষ তার উত্তরসূরীকে পূর্বসূরীর গল্প শোনায়। যে সন্তানের কাছে তার পূর্ব পুরুষের যত বেশী গল্প আছে, সে সন্তান মানসিকভাবে-মননে ততবেশি সমৃদ্ধ।

জিনাত বুক ডিপো ছিল আমাদের সমৃদ্ধ মননের প্রতীক বিশেষ। দেশী বই ও ওপারের বইয়ের বাইরে বাকী বিশ্বের মানসম্মত বইয়ের সঙ্গে এদেশের পাঠককে পরিচিত করানোর ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অতুলনীয়। ছয় দশক ধরে আমাদের জ্ঞানচর্চাকে অভিভাবকের প্রযত্ন দিয়ে এগিয়ে নিয়েছে এই প্রতিষ্ঠান। হ্যাঁ, এর সঙ্গে মুনাফার সম্পর্ক ছিল একথা যেমন সত্যি। তার চেয়েও অধিক সত্যি হল, আলগোছে বই পড়া সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রেও পালন করেছে অতুলনীয় এক ভূমিকা। এই সময়ের বই বাণিজ্য ও বই দোকানীদের কাঠখোট্টা ব্যবহার দেখে জিনাত বুক ডিপোর সঙ্গে বই পাঠক ও ক্রেতার সম্পর্ক কেমন ছিল সেটা আঁচ করা সম্ভব নয়। ব্যতিক্রম আছে কিন্তু সেটাও জিনাতের মতো করে সহজাত ও সাবলীল নয়। বেদনার হল, এইসব প্রতিষ্ঠান যে দৃষ্টান্ত রচনা করেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে সেটাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হয়নি। কারণ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা ধরে রাখতে পারিনি। ধরে রাখার জন্য কোন চেষ্টাও করা হয়নি। 

এদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজের মানুষেরা এবং বিদ্বৎসমাজের ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় নানা ধরণের উদ্যোগ নেয়, কিন্তু জিনাতের ক্ষেত্রে কেন তারা কোন উদ্যোগ নিল না সেটা পরিস্কার নয়। এর ভেতর দিয়ে কি এটাই প্রমাণিত হল, প্রাতিষ্ঠানিকতার গুরুত্ব বিচারের চর্চা এখানে বিকশিত হয়নি। দেশে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে, তারা যে কেউ চাইলেই জিনাত বুক ডিপো রক্ষা করতে পারত। শুধু রক্ষা নয় এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখে মুনাফা করারও সুযোগ ছিল। সরকারের বেশকিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা চাইলে তাদের প্রকাশনাকে জিনাতের সঙ্গে যুক্ত করে এবং এখানে একটা শোরুম করে নিজেদের মনন চর্চাকে যেমন আরও বেশি করে ছড়িয়ে দেয়ার সুযোগ পেত, তেমনি জিনাতকেও তার স্বাভাবিক প্রবণতা ও ঝোঁক বজায় রেখে প্রাণবায়ু ধরে রাখা যেত। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহের চালিকায় সৃজনশীল অনেক মানুষ রয়েছেন, উনারা কি পারতেন না সৃজনশীল কোন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে জিনাতকে বাঁচিয়ে রাখতে।

আমাদের পাশের দেশের প্রতিবেশি প্রদেশে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশনা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান যতো রয়েছে আমাদের তার অর্ধেকও নেই। আবার তাদের বই যতোটা বিচিত্র রকমের, মানে সমৃদ্ধ, সুলভ ও পাঠক বান্ধব সেই বিচারে আমাদের চিত্রটা কেমন সেটা খতিয়ে দেখা জরুরি। সেটা যে হয়ে উঠেনি তার কারণ আমাদের এখানে বই সংস্কৃতির যথার্থ পৃষ্ঠপোষণা করা হয়নি। এবং এই শিল্পে নৈতিকতার চর্চা জারি নেই। এর পেছনে অনেক কারণের অন্যতম কারণ যে আমাদের শতায়ু প্রতিষ্ঠানের স্বল্পতা এবং প্রতিষ্ঠানকে ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের সম্পদ জ্ঞান না করা এবং মান্যতা না দেয়া।

জিনাত বুক ডিপো বন্ধ হয়ে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে কেবল এর মালিক ফয়সালের ব্যক্তিগত একটা প্রতিষ্ঠানের যবনিকাপাত যেমন ঘটল, তেমনি একই সঙ্গে রাষ্ট্রেরও একটা প্রতিষ্ঠানের সমাপ্তিরেখা টানা হল। যার সঙ্গে যুক্ত ছিল ছয় দশকের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নিবিড় বন্ধন। এ কারণে ফয়সালরা যখন ভারবহনে অক্ষম তখন রাষ্ট্রের কি উচিৎ ছিল না তাদের পাশে দাঁড়িয়ে এমন প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করার। ব্যক্তি ও রাষ্ট্র যখন হাত ধরাধরি করে এগিয়ে যায়, তখন সকলেরই কল্যাণ হয়। কেউ যদি মনে করেন, দেশ ও জাতির বড় ক্যানভাসে জিনাত বুক ডিপো হয়তো ততটা গুরুত্বের নয়, উনারা কি এটা অস্বীকার করতে পারবেন, ছোট ছোট বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল?

Comments

The Daily Star  | English

Managing expectations the challenge for EC

The EC was a rubber stamp to legalise AL's usurpation of power in last three elections

1h ago