প্রাক্তন কি জীবনে এখনো প্রভাব ফেলছে? জেনে নিন ৭ লক্ষণ

ছবি: সংগৃহীত

অতীত সবারই থাকে। কিন্তু সেই অতীতকে, অতীতের মানুষের স্মৃতি আঁকড়ে ধরে বর্তমানে ভালো থাকাটা কঠিন। বিশেষ করে যেকোনো প্রেমের সম্পর্কেই নিজের প্রাক্তনকে ভুলতে না পারা, বর্তমান সঙ্গীর সঙ্গে থেকেও প্রাক্তনের স্মৃতিতে ডুবে থাকার মতো সমস্যা একসঙ্গে দুজন মানুষকে অসুখী করে ফেলতে পারে। তাই নিজের ও নিজের সঙ্গীর ক্ষেত্রে এই সাতটি লক্ষণ আছে কি না, তা যাচাই করে নিলে সম্পর্কের পরবর্তী ধাপে যাওয়া কিছুটা হলেও সহজ হবে।

প্রাক্তনকে দোষারোপ

এক হাতে তালি বাজে না। আর তাই যেকোনো এক পক্ষের জন্য সম্পর্কের সব দোষ তোলা থাকে না। কিন্তু যদি কেউ সারাক্ষণই তার প্রাক্তনকে নিয়ে কথা বলে, তার ছোটখাটো থেকে বড়—সব ভুল নিয়ে বিশাল পাঁচালি পড়তে থাকে, তবে ধরে নেওয়া যায় যে সে এখনো প্রাক্তন প্রেমিক কিংবা প্রেমিকাকে ভুলতে পারেনি। তার হৃদয়ের অলিগলিতে বর্তমান মানুষটি হেঁটে গেলেও মস্তিষ্কের ঘুরপাকে সেই প্রাক্তনেরই সুর বাজে।

প্রাক্তনের প্রসঙ্গে অস্থিরতা

এটি আসলে নির্ভর করে মানুষের আলাদা আলাদা ব্যক্তিত্বের ওপর। কীভাবে কেউ নিজের মানসিক চাপকে সামাল দিচ্ছে, তার ওপর এই বিষয়টিও ভিন্ন-ভিন্নভাবে বেরিয়ে আসে। কেউ হয়তো স্বভাবত চুপচাপ, কিন্তু ভীষণ রাগী। এমন মানুষ যখন তার প্রাক্তনকে মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেক্ষেত্রে তার কোনো প্রসঙ্গ এলেই তার মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেবে। আচরণে এর বহিঃপ্রকাশ পাবে, এমনকি রাগারাগিও হতে পারে। হতে পারে অনেকদিন ধরে প্রাক্তনের সঙ্গে যোগাযোগ নেই, কিন্তু কোথাও তার উল্লেখ ঘটলে বা কোনো ছবি সামনে চলে আসলে তারা অস্থির হয়ে পড়ে।

একেবারে চুপ মেরে যাওয়া

উপরের লক্ষণটির একদম বিপরীত এটি। প্রাক্তনের কথা তুললেই বিশাল কোনো গোপন বিষয় তুলে ফেলেছেন, এমন একটা ভাব করা—কোনো তথ্যই বলতে না চাওয়া এবং লুকোচুরি করা। আমরা যখন জীবনে সামনে এগোই, তখন স্বাভাবিকভাবেই অতীতের সঙ্গে একটি সুস্থ সমঝোতা করে এগোনো উচিত। কিন্তু যদি কারো ক্ষেত্রে এমনটা না ঘটে এবং পুরোনো সম্পর্কে সুতা ঠিকভাবে না কেটে বেরিয়ে আসা হয়, তবে এমন আচরণ দেখা যায়। কারণ তখন প্রাক্তনের বিষয়ে কথা বলতে এতটাই কষ্ট হয় যে ব্যক্তি যেভাবে হোক সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে চলার জন্য পড়িমরি করে।

পুরোনো জিনিস জমিয়ে রাখা

মানুষকে আমরা বহুভাবে মনে রাখি। কখনো স্মৃতির অনুভূতি হিসেবে, কখনো ছবির অ্যালবামে, আবার কখনোবা তার দিয়ে যাওয়া উপহারের মাধ্যমে। কেউ যদি তার প্রাক্তনের দিয়ে যাওয়া জিনিসগুলো অনেক বেশি যত্ন করে রাখে, প্রায়ই ব্যবহার করে এবং এ নিয়ে এখনো মাতামাতি করে—তবে ধরে নিতে হবে, অতীত সম্পর্কটি এখনো ভালোভাবে তার পিছু ছেড়ে যায়নি। সেখানে ফেরার সম্ভাবনাও বাতিল করে দেওয়া যায় না।

এখনো যোগাযোগ হয়

এই সবগুলো লক্ষণের মধ্যে সবচেয়ে জটিল হচ্ছে এটি। হতেই পারে প্রাক্তনের সঙ্গে কারো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। সেক্ষেত্রে তাদের যোগাযোগকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখার দরকার নেই, যদি না তেমন কোনো সন্দেহের জায়গা থেকে থাকে। তবে যদি তারা বন্ধু না হয় এবং তাদের মধ্যে এখনো কোনোরূপ সংজ্ঞাবিহীন, লুকোচুরির যোগাযোগ থেকে থাকে, তবে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রাক্তনের প্রভাব এখনো সরাসরি সেই ব্যক্তির জীবনে বিদ্যমান।

অনলাইনে নজরদারি

এখন আমাদের অনলাইনের যুগে অফলাইনের চেয়েও বেশি উত্তেজনা কাজ করে। কেউ কাউকে ছেড়ে গেলেও তার প্রোফাইলে ঘুরে বেড়ানো, সারাক্ষণ তার ছবি দেখা, এমনকি নিজেদের পুরোনো ছবি, কথোপকথন ইত্যাদিতে জাবর কেটে সময় পার করার মতো অসুস্থ চর্চাও প্রায় স্বাভাবিক রূপ নিতে চলেছে। কেউ যদি তার প্রাক্তনের অনলাইন উপস্থিতির দিকে এখনো খুবই সচেতন হয়ে থাকে, তবে ধরে নিতে হবে সেই মানুষটি তার কাছে আজও কোনো না কোনোভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

সম্পর্কে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে ভয়

অনেকের মধ্যে সহজাতভাবেই দায়বদ্ধতাভীতি থাকে, এর ফলে তারা সিচুয়েশনশিপ বা ফ্লিংয়ের মতো সম্পর্কে স্বচ্ছন্দ হলেও প্রেম বা বিয়ের মতো দায়বদ্ধ কোনো সম্পর্কে যেতে চায় না। কিন্তু এর বাইরেও আরেক দল আছে, যারা কিনা এখনো তাদের প্রাক্তনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি। তারাও নতুন কোনো সম্পর্কে নিজেকে পুরোটা উজাড় করে দিতে পারে না। কারণ তাদের মনে এখনো পুরোনো দিনে ফেরত যাওয়ার কিঞ্চিৎ আশার আলো মিটমিট করে জ্বলছে। এ আশা তার জন্য কতটা ভালো, সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ হলেও তার সঙ্গীর জন্য মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।

উপরে আলোচনা করা এই লক্ষণগুলো যদি কারো প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে, এমনকি বন্ধুদের মাঝে দেখা যায়—তবে বিষয়গুলো নিয়ে খোলাসা করুন, আলাপ করুন। আর যদি নিজের মধ্যেই দেখতে পাওয়া যায়, তবে অন্তত এই বিষয়টি নিশ্চিত করুন, বর্তমানে যার সঙ্গে আছেন, কোনোভাবে তার সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে না তো?

 

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh 2025-26 budget

Budget to shrink amid fiscal strain

Bangladesh’s interim government is preparing to unveil a rare contractionary budget on June 2, driven by a sharp rise in interest payment that is crowding out fiscal space and forcing spending cuts.

12h ago