২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ কোটি টাকা মোট ঋণের প্রায় ৩২ শতাংশই দুর্দশাগ্রস্ত ঋণ। এ পরিসংখ্যান এক বছর আগের চেয়ে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা বা ২৬ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পৃথক দুটি বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত হয়।
এই পরিসংখ্যান গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক কেলেঙ্কারি ও অনিয়মের শিকার হওয়া ব্যাংক সেক্টরের নাজুক অবস্থাকে তুলে ধরেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ অনুমতির ওপর ভিত্তি করে এই ঋণ খেলাপি হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়নি।
আটটি ব্যাংকের পরিচালকরা পারস্পরিক যোগসাজসে ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। এর বাইরে চারটি ব্যাংক পরিচালকদের আত্মীয়দের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।
ঋণের বিপরীতে প্রভিশন হিসেবে ১৫৩ কোটি টাকা রাখা হলেও আমানতকারী ও অংশীদারদের স্বার্থ রক্ষায় নয় হাজার ২৮১ কোটি টাকা রাখার কথা ছিল।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, বেশ কয়েকটি ব্যাংকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে
দেশব্যাপী কারফিউ জারি ও পাঁচ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এই পরিস্থিতির জন্য মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক দায়ী। কারণ তারা কঠোরভাবে তদারকি করেনি।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, বেশ কয়েকটি ব্যাংকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে
দেশব্যাপী কারফিউ জারি ও পাঁচ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এই পরিস্থিতির জন্য মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক দায়ী। কারণ তারা কঠোরভাবে তদারকি করেনি।
আইএমএফ জানিয়েছে, স্বায়ত্তশাসনের অভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
ব্যাংকগুলোর ঋণ আদায়ের ব্যর্থতার কারণে আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। পাশাপাশি নতুন ঋণ দেওয়ার সক্ষমতাও কমে গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়কে তদন্ত করতে হবে কেন ও কীভাবে বছরের পর বছর ভুল তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে এবং দেশব্যাপী এর প্রভাব কী ছিল।
এক সেমিনারে রেহমান সোবহান বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছু করা খুব কঠিন হতে যাচ্ছে, কারণ এই শ্রেণিটি এখন আমলাতন্ত্রের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।’
সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা আইএমএফের সঙ্গে পরামর্শ করে খেলাপি ঋণ কমানোর দিকনির্দেশনাটি কার্যকর করে যাবো।’
খেলাপি ঋণ এমন এক সময়ে বেড়েছে যখন আইএমএফের কাছ থেকে সরকার ৪.৭ ডলার ঋণ পেতে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ কমানোর লক্ষ্য নিয়েছে।
বর্তমানে বিতরণকৃত ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশই খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে।