জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ

‘মারধরকারীরা আমার জুনিয়র ব্যাচের। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তারা আরও বেশি মারধর করে। এমনকি আমি গেস্টরুমের আশপাশে ছিলাম কিনা, ভিডিও করছিলাম কিনা এসব নিয়ে তারা আমাকে প্রশ্ন করতে থাকে।’
ফাইল ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে হলের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। মারধরে জড়িত সবাই একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং জাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী।

মারধরের শিকার আসিফ আল মামুন বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের (ইউএনবি) ক্যাম্পাস প্রতিনিধি। আজ সন্ধ্যায় তিনি হলের প্রাধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মূল অভিযুক্তরা হলেন মো. নাঈম হোসেন, আমিনুর সুমন, হৃদয় রায়, শাফায়েত হোসেন তোহা ও মেহেদী হাসান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাত দুইটার দিকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি শেষে হলের অতিথি কক্ষে ছাত্রলীগের রাজনৈতিক আলোচনাসভা চলছিল। সে সময় বাইরে থেকে কেউ ভিডিও করছে—এমন সন্দেহে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চোর চোর বলে হট্টগোল শুরু করে। তখন আসিফ এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় হলের ভেতরের দোকানে চা খাচ্ছিলেন। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চিৎকার শুনে তারা সেদিকে দৌড়ে যান। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আসিফকে বেধড়ক মারধর করেন।

আসিফ নিজেকে হলের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে গালিগালাজ ও মারধর করা হয়।

সাংবাদিক আসিফ আল মামুন বলেন, 'ঘটনার সময় আমি দোকানে চা খাচ্ছিলাম। হলে মাঝেমধ্যেই সাইকেল বা বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরির ঘটনা ঘটে। তাই হট্টগোল শুনে মাঠে যাই। তারা এই সুযোগে আমাকে মারধর করে। মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে আমি হাত দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করি।'

তিনি আরও বলেন, 'মারধরকারীরা আমার জুনিয়র ব্যাচের। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তারা আরও বেশি মারধর করে। এমনকি আমি গেস্টরুমের আশপাশে ছিলাম কিনা, ভিডিও করছিলাম কিনা এসব নিয়ে তারা আমাকে প্রশ্ন করতে থাকে।'

প্রত্যক্ষদর্শী অমর্ত্য রায় বলেন, আমি আর আসিফ ভাই ঘটনার একঘণ্টা আগে থেকেই একসঙ্গে ছিলাম। আমরা বটতলা থেকে একসঙ্গে হলে ফিরে চা খাচ্ছিলাম। এর মধ্যে হট্টগোলের শব্দ শুনে ভাই নিচে নামলে তাকে উপর্যুপরি মারধর করা হয়।

বক্তব্য জানতে হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ ড. মো. এজহারুল ইসলাম ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনকে একাধিকবার কল করা হলেও তারা কেউ কল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, 'বিষয়টা জানামাত্র আমি হল প্রভোস্টকে জানিয়েছি এবং অতি দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।'

Comments