এইচএসসির প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক বিষয়

পাবলিক পরীক্ষার কাজে অংশ নিতে পারবেন না সেই শিক্ষকরা

চলতি বছর এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষায় যেসব শিক্ষক হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতি আঘাত করার মতো প্রশ্ন প্রণয়ন ও মডারেশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তারা আগামীতে আর কোনো ধরনের পাবলিক পরীক্ষার কাজে অংশ নিতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছর এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষায় যেসব শিক্ষক হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতি আঘাত করার মতো প্রশ্ন প্রণয়ন ও মডারেশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তারা আগামীতে আর কোনো ধরনের পাবলিক পরীক্ষার কাজে অংশ নিতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, তদন্ত কমিটি দেখেছে যে, এই শিক্ষকরা প্রশ্নপত্র তৈরির কাজে সরকারি নির্দেশিকা লঙ্ঘন করেছেন। তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই শিক্ষকরা হলেন- ড. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দিন শাওন, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শফিকুর রহমান, নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম।

এদের মধ্যে প্রশ্ন প্রণকারী প্রশান্ত কুমার পাল। বাকিরা মডারেশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসির গত ৬ নভেম্বরের পরীক্ষার জন্য তারা এইা প্রশ্নপত্র তৈরি ও মডারেশন করেন। তাতে হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মতো বিষয় ছিল।

২০০৯ সালে প্রণীত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশিকা অনুসারে, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও মডারেশনের সঙ্গে ‍যুক্ত ব্যক্তিরা এমন কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না, যা ধর্ম, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, ঐতিহাসিক স্থান ও অন্যদের অসম্মান করে।

এছাড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম রয়েছে, এমন প্রশ্ন করার ক্ষেত্রেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

ওই নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কোনো ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও জাতীয় অনুষ্ঠানকে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন কোনো বিষয় প্রশ্নপত্রে থাকা উচিত না।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্রের ভাষ্য, যশোর বোর্ড এই শিক্ষকদের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা চূড়ান্ত নাও হতে পারে। তিনি বলেন, 'আমাদের যতটুকু ক্ষমতা সে অনুসারে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

তিনি জানান, তারা ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছেন। বলেন, 'আশা করি, তারাও তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।'

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ইঙ্গিত দেন, জড়িত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা মাসিক পে-অর্ডার সুবিধা হারাতে পারেন। একইভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ইনক্রিমেন্ট বন্ধ কিংবা একই রকমের অন্য কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

 

Comments