যেসব কারণে ব্যান হতে পারেন টিন্ডারে

যেসব কারণে ব্যান হতে পারেন টিন্ডারে
ছবি: সংগৃহীত

প্রেমে প্রেমে বেলা ফুরাবার ক্ষণও এখন কোথাও না কোথাও এসে ঠেকে হাতের তেলোয় থাকা চারকোণা এক মুঠোফোনে, ডিজিটাল পর্দায়। মানুষের এখনো মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বাইরের দুনিয়াটা বিস্তৃত আছে, তবু অনেকেই যেন প্রথমেই সাক্ষাতের পর্যায়ে না গিয়ে মেসেজ আদান-প্রদানের মাধ্যমে নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে চান। 

এ ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও। তবে একটু বিশেষায়িত করে বললে– শুধু রোমান্টিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টিন্ডার বোধহয় সবচেয়ে পরিচিত নাম। 

মন খুলে, চোখ খুলে টিন্ডারের পর্দায় ঘুরে বেড়ানো বেশ সহজ। তবে এখানেও আছে কিছু নিয়ম-নীতি, যা মেনে না চললে আছে ব্যান হবার, অর্থাৎ টিন্ডার প্রাঙ্গন থেকে বিতাড়িত হবার আশঙ্কা। 

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, কোন ৫ বিষয়ে সচেতন হলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে না–

ভুয়া পরিচয়

টিন্ডারে যে ভুয়া পরিচয় দিয়ে নকল প্রোফাইল তৈরি করা সম্ভব নয়, তা মোটেও নয়। কিন্তু তা ধরা পড়ে যাবার সম্ভাবনাও প্রচুর কেন না টিন্ডারের মনিটরিং দক্ষতা বেশ কুশলী। এ ক্ষেত্রে সাবধান থাকাটা জরুরি।

টিন্ডারসহ যেকোনো অ্যাপেই যোগাযোগে একটা ভয় থাকে, যার সঙ্গে কথা হচ্ছে– তারই ছবি দেখছি কি না। শহুরে অভিধানে 'ক্যাটফিশিং' বলেও একটা শব্দ যোগ হয়েছে অনেকদিন হলো। এর মানে হচ্ছে, কারও সঙ্গে ডিজিটাল বার্তা আদান-প্রদান করে হয়তো আলাপ অনেক জমার পর একদিন দেখা করতে গেলেন। কিন্তু গিয়ে দেখলেন, যার ছবি দেওয়া ছিল প্রোফাইলে, তিনি এই ব্যক্তি নন। এমন ফেঁসে যাওয়া অবস্থা থেকে দূরে থাকতে নিজের ছবি ভেরিফাই করে নেওয়া দরকার, যাতে অন্য কারও জন্যও দুশ্চিন্তার কারণ না হয়। 

এ ছাড়া সোয়াইপ রাইট করার পর প্রোফাইল ম্যাচ করে গেলে অপরপক্ষের প্রোফাইলটি 'ভেরিফায়েড' লেবেলযুক্ত কি না, তা নিয়েও সচেতন থাকতে হবে। এমনটা অবশ্যই নয় যে প্রতিটি ভেরিফিকেশন ছাড়া প্রোফাইলই নকল, কিন্তু সাবধানের মার নেই। অতঃপর সব ধরনের নিরাপত্তার জন্য টিন্ডারে ফটো ভেরিফিকেশন প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে পারে।

বয়সসীমা লঙ্ঘন

টিন্ডারে আন্তর্জাতিক প্রাপ্তবয়স্কতা অনুযায়ী ১৮ বছরের বয়সসীমা মেনে চলা হয়। তাই ১৮ বছরের আগে এখানে অ্যাকাউন্ট খোলাটা অ্যাপের গাইডলাইনের বিরুদ্ধে যাওয়া হবে এবং এর ফলে ব্যবহারকারীর উপর 'ব্যান' নামের খড়গ নেমে আসতেই পারে। শুধু প্রোফাইল নয়, প্রোফাইলে থাকা ছবির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য এই বয়সের সীমারেখা। ১৮ বছরের কমবয়সী কোনো ছবিও থাকতে পারবে না টিন্ডার প্রোফাইলে, থাকলেই আছে ব্যান হবার আশঙ্কা।

অ্যাকাউন্ট যৌথভাবে পরিচালনা
 
বন্ধুদের সঙ্গে মজা করে একটি টিন্ডার অ্যাকাউন্ট একসঙ্গে চালানোর ব্যাপারটা তেমন কিছু মনে না হলেও এটি কিন্তু টিন্ডারের 'টার্মস অব সার্ভিস'-এর বিরুদ্ধে যায়। টিন্ডার কর্তৃপক্ষ আশা করে যে, প্রতিটি ব্যবহারকারী তাদের নিজের ও অপরপক্ষের গোপনীয়তা রক্ষা করবে। একই অ্যাকাউন্ট একাধিক ব্যক্তি পরিচালনা করলে বেশ কিছু সমস্যা হয়। যোগাযোগে ঝামেলা হয়, সেইসঙ্গে গোপনীয়তা ঝুঁকিগ্রস্ত হবার বিষয়টি তো আছেই। 

হেট স্পিচ বা অপমানসূচক কথাবার্তা

সম্প্রতি টিন্ডার কর্তৃপক্ষ এর ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ৩টি সেফটি ফিচার সামনে এনেছে। এগুলো হচ্ছে 'ইনকগনিটো মোড', 'ব্লক প্রোফাইল' এবং 'লং প্রেস রিপোর্টিং'। 

তৃতীয় সেফটি ফিচারটির মাধ্যমে মূলত ব্যবহারকারীদের আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কেউ চাইলে অন্য কারো কোনো আচরণ অশোভন মনে হলে এর মাধ্যমে টিন্ডারের কাছে 'রিপোর্ট' করতে পারেন। এবং এর মাধ্যমে যে প্রোফাইলগুলো টিন্ডারের কমিউনিটি গাইডলাইনের বিরুদ্ধে যাবে, সেগুলোকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হবে। তাই কারও সঙ্গে কথোপকথনের সময় জাতিগত, জেন্ডারগত বা অন্য কোনোরকম হেটস্পিচ বা অবমাননামূলক কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। সহজ কথায়, সাধারণ শিষ্টাচার বজায় রাখলেই আর অহেতুক নিষিদ্ধ হতে হবে না।

ব্যান হবার পরই নতুন অ্যাকাউন্ট

অনেকেই হয়তো এত বাধ্যবাধকতা দেখে ভাবছেন, একটা অ্যাকাউন্ট গেলে কী! নতুন অ্যাকাউন্ট তো খোলা যাবে। কিন্তু টিন্ডারে ব্যান হবার বিষয়টি আসলে অতটা সহজ নয়। একবার ব্যান হওয়া ব্যক্তি যখন নতুন আরেকটি প্রোফাইল খুলতে যান, তখনো তিনি টিন্ডারের নজরদারিতে থাকেন। অতঃপর, সাধু সাবধান! 

 

তথ্যসূত্র: এমইউও, বিজনেসইনসাইডার, ইন্ডিয়াটুডে

Comments

The Daily Star  | English

Killing of trader in old Dhaka: Protests erupt on campuses

Protests were held on campuses and in some districts last night demanding swift trial and exemplary punishment for those involved in the brutal murder of Lal Chand, alias Sohag, in Old Dhaka’s Mitford area.

3h ago