এআই দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন কারাবন্দি ইমরান
গোপনে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির অভিযোগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত আগস্ট মাস থেকে কারাবন্দি রয়েছেন। তবে বন্দি থাকলেও তার প্রচারণা থেমে নেই।
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই-ইনসাফ (পিটিআই) গত ১৭ ডিসেম্বর রোববার চার মিনিটের একটি প্রচারণামূলক ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে অবিকল ইমরানের কণ্ঠ তৈরিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ভয়েস ক্লোনিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
এই তথ্য জানিয়েছে প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট ভার্জ।
পিটিআই'র এক ভার্চুয়াল সমাবেশে এই ভিডিওটি প্রথমবারের মতো প্রচার করা হয়। ভিডিওর শুরুতেই বলা হয় 'ইমরান খানের লেখা নোটের ভিত্তিতে তার এআই কণ্ঠ ব্যবহার করা হয়েছে'।
ইমরান খানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পরিচালনাকারী দলের প্রধান জিবরান ইলিয়াস ভিডিওটি এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রকাশ করেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ইমরান খান পিটিআই'র কাছে হাতে লেখা একটি ছোট স্ক্রিপ্ট পাঠান, যা পরে দলের আইনজীবীরা এমনভাবে সম্পাদনা করেন যাতে সেটি ইমরানের রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার ধরনের সঙ্গে আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
এই সম্পাদিত লেখার ভিত্তিতে পরবর্তীতে এআই ভয়েস ক্লোনিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইমরানের কণ্ঠের মতো করে বক্তব্য তৈরি করা হয়। এ কাজে এআই সফটওয়্যার তৈরির প্রতিষ্ঠান ইলেভেন ল্যাবসের টেক্সট-টু-স্পিচ (লেখা থেকে বলা) সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়।
ইলিয়াস বলেন, 'ইমরান খান যেহেতু রাজনৈতিক সমাবেশে নিজে উপস্থিত থাকতে পারছেন না, তাই এটাই ছিল আমাদের জন্য সহজ সিদ্ধান্ত। (রাজনৈতিক) দমন-পীড়ন মোকাবিলা করার এটি একটি উপায়।'
Founding Chairman Imran Khan's speech in AI voice. Can't stop praising Dr Asma for staying up 36 hours to get this done in time, Nausheen for translations and Intazar Bhai for getting notes from the Legend Imran Khan! #PTIVirtualJalsa pic.twitter.com/9CoDVT4sXb
— Jibran Ilyas (@agentjay2009) December 17, 2023
ইমরানের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছেন। পিটিআই'র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিচালনাকারী দল আর্কাইভ থেকে ইমরান খানের পুরনো বক্তৃতা সরবরাহ করে। এগুলো ব্যবহার করে ইলেভেন ল্যাবসের সিনথেটিক অডিও ইঞ্জিন তার কণ্ঠের নির্ভুল অনুলিপি তৈরি করেছে।
ভিডিওতে পুরনো ভিডিও ফুটেজ ও ছবি – উভয়ই ব্যবহার করা হয়েছে।
পিটিআই'র ভার্চুয়াল সমাবেশ ইউটিউবে পাঁচ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়েছে। অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও অসংখ্য মানুষ এটি দেখেছেন।
মানুষ যাতে ভার্চুয়াল সমাবেশটি দেখতে না পারে, সেজন্য পাকিস্তান সরকার ১৭ ডিসেম্বর দেশটিতে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স ও ইউটিউব বন্ধ করে দেয়।
ইন্টারনেট পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান নেটব্লকস এক্সে জানায়, রবিবার বিকেলে পুরো পাকিস্তানেই এই সামাজিক মাধ্যমগুলো যথাযথভাবে সচল ছিল না।
উল্লেখ্য, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। নির্বাচনের আগে ইমরান খান জেল থেকে ছাড়া পাবেন কি না, তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনাকল্পনা চলছে পাকিস্তানে। ইমরানকে জেলে রেখে নির্বাচন আদৌ সম্ভব কিনা, তা নিয়েও দ্বিধান্বিত পাকিস্তানের মানুষ।
সূত্র: দ্য ভার্জ
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
Comments