যথেষ্ট মনের জোর নিয়ে বিশ্বকাপে আসেনি বাংলাদেশ দল
ওয়ানডে সংস্করণ নিয়ে অনেক অহংকার ছিল বাংলাদেশ দলের। বাকি দুই সংস্করণে হাবুডুবু খেলেও ৫০ ওভারের ক্রিকেট বাংলাদেশ নিজেদের যথেষ্ট সমীহ করার মতন দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই অহংবোধে এবার বিশ্বকাপ দিয়েছে বড় চোট।
বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স দিয়ে বাংলাদেশকে মনে হচ্ছে ছোট দল। টানা হারের পাশাপাশি প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই করতে না পারা মিলিয়ে দলটিকে অচেনা লাগছে নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনের। আর এক ম্যাচ পর শেষ হবে এবারের মিশন। শেষের আগে তাই চলছে হিসেব নিকেশ। সেই হিসেব করে বেশ কিছু ঘাটতি ধরা পড়েছে তার চোখে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ দল এখন পুনেতে। হোটেল জে ডাব্লিউ ম্যারিয়টে বুধবার দিনটা একদম বিশ্রামে পার করেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ছিটকে যাওয়ার পর দেশ থেকে উড়ে এসে সন্ধ্যায় দলে যুক্ত হয়েছেন এনামুল হক বিজয়। ওপেনার লিটন দাসও দেশে। বৃহস্পতিবার পারিবারিক প্রয়োজন সেরে তার যোগ দেয়ার কথা।
বিশ্রামের অলস দিনে টিম হোটেলে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হন হাবিবুল। পেছনে তাকিয়ে ৮ ম্যাচের খতিয়ান টেনে দুই জয়ের বাইরে তিনি পাচ্ছেন পাহাড়সম হতাশা। তবে এমনটা যে হয়ে যেতে পারে সেই যুক্তি দিলেন সাবেক অধিনায়ক, 'আমরা সবাই দেখেছি বিশ্বকাপ কেমন কেটেছে । নিশ্চিতভাবেই হতাশার। অনেক আশা করে এসেছিলাম, প্রত্যাশাও অনেক বেশি ছিল। সেটা কোনোভাবেই আমরা পূরণ করতে পারিনি। এই বিশ্বকাপের আগে আমাদের দলটা যেরকম ফর্মে ছিল, সঙ্গে পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে আমরা যেরকম ধারাবাহিক। খুব ভালো খেলছিলাম। সেজন্য প্রত্যাশা সবার থেকে একটু বেশি ছিল। আমরা প্রত্যাশা মেটাতে পারিনি।'
'জানি আরো ভালো হওয়া উচিত ছিল। এটা হয়ে থাকে। অনেক সময় আপনি ফর্মে এসে টুর্নামেন্টে ফর্ম হারিয়ে ফেলতে পারেন। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে আসলে।'
বড় টুর্নামেন্টে এসে ছন্দ হারিয়ে ফেলার পেছনে একটা কারণও পেয়েছেন নির্বাচক। দক্ষতা, ফিটনেস নিয়ে তার সংশয় নেই। তবে শারীরিক ফিটনেসের বাইরেও আরেকটি ফিটনেস আছে, মানসিক সেই ফিটনেসের ঘাটতি প্রস্তুতিতে ছিল বলে ইঙ্গিত তার, 'বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে আসার আগে আমাদেরকে মানসিক শক্তি নিয়ে বেশি কাজ করা উচিত বলে মনে করছি। স্কিলের দিক থেকে আমরা আগে যা ছিলাম এখন তাই আছি। বিশ্বকাপে বাকি দলগুলো অনেক প্রস্তুতি নিয়ে আসে। আমরাও অনেক প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলাম। কিন্তু এখানে শক্ত মানসিকতার একটা ব্যাপার থাকে। এরপর এসকল টুর্নামেন্টে আসার আগে আমাদের মেন্টাল স্ট্রেন্থ নিয়ে কাজ করতে হবে।'
স্কিলের ঘাটতি না থাকার কথা বললেও পরে কাজ করার আছে বিস্তর, 'সত্যি কথা বলতে আমাদের সব বিভাগে কাজ করতে হবে। টপ অর্ডার ব্যাটিং, ফিনিশিং, আমাদের বোলিং। বিশেষ করে মিডল অর্ডারে আমাদের বোলারদের উইকেট নেওয়ার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এখনকার যে খেলা হয়, আপনি যদি মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট না নিতে পারে তাহলে বড় রান আটকাতে পারবেন না। আমরা এই বিশ্বকাপে সেটাতে বেশ ভুগেছি।'
'সেই সঙ্গে ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডার যদি রান করতে পারে তাহলে কঠিন হয়ে যায়। নির্দিষ্ট দিনে যদি উইকেট ভালো থাকে তাহলে আপনাকে তিনশ রান করার মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে। আমাদের সব বিভাগ নিয়েই কাজ করতে হবে। শুধু একটা বিভাগ নয়। ব্যাটিং, বোলিং তো আছেই সঙ্গে নতুন বলের পাশাপাশি মিডল ওভারে উইকেট নেওয়ার মানসিকতা বাড়াতে হবে।'
Comments