গাজা থেকে থাই জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের দাবি ইসরায়েলের  

গাজায় জিম্মি থাকা অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন থাই নাগরিক নাত্তাপং পিন্তা। ছবি: এক্স
গাজায় জিম্মি থাকা অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন থাই নাগরিক নাত্তাপং পিন্তা। ছবি: এক্স

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এ সময় প্রায় এক হাজার ২০০ ব্যক্তি নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি হন। এমনই এক জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করেছে বলে দাবি জানিয়েছে ইসরায়েল।

আজ শনিবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ'র বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়।

ক্যাটজ জানান, শুক্রবার গাজার দক্ষিণের রাফা অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান চলাকালীন থাই নাগরিক নাত্তাপং পিন্তা'র (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করেছে ইসরায়েলি সেনারা। থাইল্যান্ড থেকে আসা ওই ব্যক্তি অপহৃত হওয়ার আগে পর্যন্ত ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলের এক সামরিক কর্মকর্তা জানান, সম্ভবত অপহরণের এক মাসের মাথায় নাত্তাপং প্রাণ হারিয়েছিলেন।

তবে শুক্রবারের ওই অভিযানের আগে কেউ নিশ্চিতভাবে জানতে পারেনি তিনি বেঁচে আছেন না মারা গেছেন। 

এ সপ্তাহের শুরুতে একইভাবে অপর দুই ইসরায়েলি-আমেরিকান নাগরিকের মরদেহ খুঁজে পায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ।

ওই সামরিক কর্মকর্তা জানান, নাত্তাপং বিবাহিত ছিলেন। তার একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তিনি থাইল্যান্ডে পরিবারের জীবনযাপনের খরচ মেটাতে কিব্বুৎজ নির ওজ নামের ইসরায়েলি বসতিতে কাজ করছিলেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

হামাস-মিত্র 'মুজাহিদীন ব্রিগেডের' হাতে আটক হন তিনি।

এক 'আটককৃত জঙ্গি সদস্যকে' জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই অভিযান পরিচালনা করে। বিষয়টি আইডিএফ এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে।

শনিবার নাত্তাপং'র মরদেহ উদ্ধারের পর তার স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে বিবিসি। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে বিবিসির সাংবাদিককে তিনি একটি ছবি পাঠান, যেখানে দেখা যায় তার ছেলে কান্না করছে।

হামাসের হাতে জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত সংগঠন 'দ্য হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম ক্যাম্পেইন' জানায়, '২০ মাসের ভয়াবহ ও মর্মান্তিক অনিশ্চয়তার পর' নাত্তাপং'র মরদেহ উদ্ধার হলো।

গাজার জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলা পরবর্তী দৃশ্য। ছবি: এএফপি
গাজার জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলা পরবর্তী দৃশ্য। ছবি: এএফপি

সংগঠনটি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে অবিলম্বে বাকি জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে হামাসের সঙ্গে চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছে।

নাত্তাপং ছাড়াও আরও পাঁচ থাই নাগরিক ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ড থেকে জিম্মি হন। ওই পাঁচ জিম্মি সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি পান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গাজায় আর কোনো থাই জিম্মি নেই।

এর আগে বৃহস্পতিবার গাজার খান ইউনিস থেকে বর্ষীয়ান দম্পতি জুডি ও গাদি হাগাই'র মরদেহ উদ্ধার করে ইসরায়েলি সেনা।

ওই ইসরায়েলি-আমেরিকান দম্পতির মরদেহও মুজাহিদীন ব্রিগেডের কাছে ছিল।

হামাসের হাতে আটক ২৫১ জিম্মির মধ্যে এখনো ৫৪ জন গাজায় আছেন বলে ধারণা করা হয়। ইসরায়েলি সেনার দাবি, তাদের মধ্যে ৩১ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলার পর সেদিনই গাজায় নির্বিচার ও প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের গণহত্যামূলক হামলায় ৫৪ হাজার ৬৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus, Modi exchange Eid greetings

The interim government on Sunday shared both the letters on its Facebook page

1h ago