যুদ্ধবিরতির মাঝেও গাজায় চলছে ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞ

সানাদ প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্র। ছবি: আলজাজিরার সৌজন্যে

গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চল রাফাহতে কয়েক ডজন বাড়িঘর ধ্বংস করেছে ইসরায়েল, যা ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সোমবার আলজাজিরার নিজস্ব তথ্য যাচাই সংস্থা সানাদের স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে আসে।

মিশর সীমান্তে অবস্থিত রাফাহ ক্রসিং দিয়ে দীর্ঘদিন ত্রাণ সহায়তা এসেছে গাজায়। গত মে মাসে এই ক্রসিংটি বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল।

১৯৭৯ সালের মিশর-ইসরায়েল শান্তিচুক্তি লঙ্ঘন করে এই সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ইসরায়েল সেখানে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি করিডোর খনন করছে।

সানাদ প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, জানুয়ারির ১৯ থেকে ২১ তারিখের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফাহ ক্রসিংয়ের চারপাশে বালির দুর্গ তৈরি করে। ক্রসিংয়ের উত্তর দিকে একটি নতুন সামরিক চৌকিও স্থাপন করে।

ক্রসিংয়ের বালির দুর্গের সঙ্গে সমান্তরালভাবে এক দশমিক সাত কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা নির্মাণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এদিকে, রাফাহ শহরের হাজারো বাসিন্দা এখনো তাদের বাড়িতে ফিরতে পারেননি। আলজাজিরা জানায়, বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করলে তাদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে যুদ্ধবিরতির মাঝেই অনেক ফিলিস্তিনি আহত ও নিহত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, জানুয়ারি ১৯ থেকে রাফাহ অঞ্চল থেকে সামরিক উপস্থিতি কমানোর কথা ইসরায়েলের। যুদ্ধবিরতির ৫০তম দিনের মধ্যে সেখান থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করার কথা।

কিন্তু ১৯ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেখানে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল সেনারা। যুদ্ধবিরতির মাঝেই রাফাহ শহরের আস-সালাম, ইদারি ও তেল জারাব এলাকায় ৬৪টি ভবন ধ্বংস করেছে তারা।

এই ধ্বংসযজ্ঞ মিশরীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৭০০ মিটার দূরে ঘটেছে। একইসঙ্গে তাল আস-সুলতান এলাকাতেও অন্তত ছয়টি বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা মিশরীয় সীমান্ত থেকে ৭৫০ মিটার দূরে।

ফিলিস্তিনি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক হামজা আত্তার বলেন, চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন অনুসারে এটি একটি যুদ্ধাপরাধ।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সহিংসতায় গাজায় অন্তত ১১৮ জন নিহত হয়েছেন।

Comments