চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ চসিক কর্মচারীর

কর্মজীবনের শেষ দিনে ধরা পড়লেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সচিবালয়ের সংস্থাপন শাখার উচ্চমান সহকারী কাঞ্চন কুমার চৌধুরী।
অভিযোগ উঠেছে, করপোরেশনে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সচিব আশরাফুল আমিন তাকে আটকের নির্দেশ দেন।
গত তিন মাস আগে তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। এরপর আর অফিস করেননি প্রবীণ এই কর্মচারী। বৃহস্পতিবার ছিল তার চাকরির শেষ দিন। কর্মস্থল ত্যাগ করার আগে সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে এসে তিনি বিপাকে পড়েন।
সূত্র জানিয়েছে, যে তিন মাস তিনি অনুপস্থিত ছিলেন, সে সময়ই এই অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
চাকরির আশায় অনেক প্রার্থী করপোরেশনে যোগাযোগ করে জানতে পারেন কাঞ্চন চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। এরপর ভুক্তভোগীরা সিটি করপোরেশনের সচিবালয়ে একের পর এক কাঞ্চনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
সচিবালয়ে ইতোমধ্যে ২০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তারা প্রত্যেকেই দাবি করেছেন, চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাঞ্চন পাঁচ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি অভিযোগপত্রের অনুলিপি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে।
অভিযোগ আসার পর কাঞ্চনকে গত ২৯ জানুয়ারি সিটি করপোরেশন সচিবালয়ে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল। তবে তিনি নির্দিষ্ট তারিখে উপস্থিত হননি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভুক্তভোগী অনেকে সচিব আশরাফুল আমিনের কার্যালয়ে ভিড় করেন। সে সময় কয়েকজন ডেইলি স্টার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন।
তারা জানান, টাকা নিয়ে কাঞ্চন চৌধুরী তাদের ব্ল্যাংক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। কাউকে কাউকে গ্যারান্টি হিসেবে নিজের চেকে পাঁচ লাখ টাকা লিখে দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযোগকারীদের হিসাব অনুযায়ী, চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কাঞ্চন প্রায় ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।'
এসব অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন কাঞ্চন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এমন কাজ করা আমার ঠিক হয়নি। আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল, তারা আমাকে ব্যবহার করেছে। তারাই টাকাগুলো নিয়ে গেছে।'
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব আশরাফুল আমিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভুক্তভোগীরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।'
Comments