যেসব কারণে মতিঝিল ছাড়ছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান

মতিঝিল থেকে ব্যাংক স্থানান্তর
স্টার ফাইল ফটো

রাজধানী ঢাকার প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র মতিঝিল ক্রমেই হারিয়ে ফেলছে এর ঐতিহ্যবাহী জৌলুস। নতুন ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান যেন কেড়ে নিচ্ছে মতিঝিলের আলোকছটা।

গত এক দশকে দেশের ৬১ ব্যাংক ও ৩৫ ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) প্রায় অর্ধেকই তাদের প্রধান কার্যালয় মতিঝিল থেকে গুলশানে সরিয়ে নিয়েছে।

দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক-বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল থাকলেও  নতুন লাইসেন্সপ্রাপ্ত  ব্যাংক, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা অফিসগুলো গুলশানে প্রধান কার্যালয় স্থাপন করছে। 

২০২০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়া বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক গুলশানে প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে। একই অবস্থা ২০১৮ সালে নিবন্ধিত হওয়া কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশেরও।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির গতি পরিবর্তন, দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি হোটেল ও শপিংমলগুলো কাছাকাছি হওয়ার পাশাপাশি মতিঝিল এলাকার আধুনিকায়নের অভাব এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। 

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অধিকাংশ শিল্পকারখানা গাজীপুর, আশুলিয়া, টঙ্গী ও উত্তরায় হওয়ায় আমাদের গ্রাহকদের মতিঝিলে নিয়ে আসা অনেকটাই শাস্তিমূলক। গ্রাহকদের বেশিরভাগই মনে করেন গুলশান তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক। এ কারণেই ব্যাংকগুলো তাদের প্রধান কার্যালয় গুলশানে নিতে এত আগ্রহী।'

২০১৪ সালে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় মতিঝিল থেকে গুলশানে চলে আসার আরেকটি কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, 'বেশিরভাগ বিলাসবহুল হোটেল ও শপিংমল গুলশানে। বিদেশিদের জন্য তা সুবিধাজনক। তারা আমাদের স্থানীয় গ্রাহকদের নিয়ে গুলশানের ব্যাংকে যান।'

তার মতে, গ্রাহকদের একটি বড় অংশ এখন উত্তরা, গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডিতে থাকেন। মতিঝিলের তুলনায় গুলশান যাওয়া তাদের জন্য সহজ।

'বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিলে থাকায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তা সুবিধাজনক,' বলে মনে করেন তিনি।

ওই ব্যাংক কর্মকর্তা আরও বলেন, 'মতিঝিলের তেমন উন্নয়ন হয়নি। অবকাঠামো ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে গুলশান ও উত্তরা সমৃদ্ধ হচ্ছে।'

ইস্টার্ন ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খুরশেদ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বেশিরভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের প্রধান কার্যালয়  ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে থাকতে চায়। এগুলোর বেশিরভাগই গুলশান ও উত্তরায়।'

'একইভাবে কারখানার বেশিরভাগই গাজীপুর, ভালুকা ও ময়মনসিংহে। তাই ব্যাংকগুলো তাদের প্রধান কার্যালয় গুলশানে নিয়ে আসছে।'

তার মতে, বিদেশিরাও মতিঝিলের পরিবর্তে গুলশান ও বনানী বেশি পছন্দ করেন। কারণ ওসব এলাকা বিমানবন্দরের কাছাকাছি।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক ছাড়াও গত কয়েক বছরে প্রাইম ব্যাংক, এবি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক তাদের প্রধান কার্যালয় গুলশানে স্থানান্তর করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Polythene ban: A litmus test for will and eco-innovation

Although Bangladesh became the first country in the world to announce a complete ban on the use of polythene bags in 2002, strict enforcement of the much-lauded initiative has only started taking shape recently.

16h ago