বাজারে বেড়েছে চালের দাম

চাল
ছবি: সংগৃহীত

গত সপ্তাহে রাজধানীর কাঁচাবাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ধানের দাম বৃদ্ধি ও রাইস মিল থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণেই চালের দাম বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ৫০ কেজির বস্তায় চালের দাম ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

তবে সরেজমিনে রাজধানীতে চালের চারটি বড় পাইকারি বাজার—কারওয়ান বাজার, কচুক্ষেত, মিরপুর-১১ ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে চালের যথেষ্ট মজুদ দেখা যায়।

চালের দাম বৃদ্ধির জন্য খুচরা বিক্রেতারা দায়ী করছেন পাইকারদের; আর পাইকাররা দাবি করছেন, মিল পর্যায়ে দাম বেড়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মেসার্স আনিস এন্টারপ্রাইজের কর্মী মো রাজু আহমেদ বলেন, 'বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের চালের দাম গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এই চালগুলোর দাম প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আজ (মঙ্গলবার) আমরা বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের ৫০ কেজির বস্তা তিন হাজার থেকে তিন হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করছি। এক সপ্তাহ আগেও এই চাল বিক্রি করেছি দুই হাজার ৮৫০ থেকে দুই হাজার ৯৫০ টাকায়।'

একই বাজারের মেসার্স অনু এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, 'মধ্যবিত্তরা এই দুই ধরনের চাল বেশি কেনেন, ফলে এর চাহিদাও বেশি। কিন্তু, বর্তমানে এসব জাতের মজুদ কম থাকায় দাম বাড়ছে।'

নতুন ধান কাটার পর নভেম্বরের শেষ দিকে বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের চালের দাম কমতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন উভয় ব্যবসায়ী।

মিরপুর-১১-এর মকবুল রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন বলেন, 'মোটা চালের পাইকারি দাম ৫০ কেজির বস্তা প্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বেড়ে দুই হাজার ৪৮০ টাকা থেকে দুই হাজার ৫২০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'মিল মালিকরা দাবি করছেন, তাদের কাছে পর্যাপ্ত মজুদ নেই। কিন্তু আসলে আছে। তারা সংকটের অজুহাত দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে বেশি দাম নিচ্ছে।'

মিনিকেট ও নাজিরশাইল জাতের চালের দামও মানভেদে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা প্রতি বস্তা মিনিকেট চাল তিন হাজার ২৫০ থেকে তিন হাজার ৭৫০ টাকায় এবং নাজিরশাইল তিন হাজার ৩০০ থেকে তিন হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।

গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে চালের দাম প্রতি কেজিতে এক থেকে তিন টাকা বেড়ে যাওয়ায় চাপ বাড়ছে ভোক্তাদের ওপর।

কৃষি মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা মোহাম্মদপুরের আজিজ মহল্লার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন, 'চারদিন আগেও বিআর-২৮ চাল কিনেছি ৬২ টাকা কেজিতে। আর আজ (মঙ্গলবার) দোকান মালিক এই চালের দাম চাইছেন ৬৫ টাকা।'

তিন মাস আগে বিআর-২৮ চালের দাম ছিল ৫৪ টাকা কেজি। গত তিন মাসে পাঁচ থেকে ছয় দফায় দাম বেড়েছে বলে জানান ফাতেমা।

তিনি বলেন, 'আমার ছেলে গার্মেন্টসে কাজ করে ছয়জনের পরিবার চালায়। নিত্যপণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া, কিন্তু তার বেতন তো বাড়ে না। আমরা বাঁচি কীভাবে?'

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মা চাল ভাণ্ডারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. রাসেল বলেন, 'কেজিতে আমরা পাঁচ থেকে ছয় টাকা লাভ করি। পাইকাররা আমাদের কাছ থেকে বেশি দাম নিচ্ছে বলে দাম বাড়ানো ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।'

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

6h ago