ঘরেই বানান পূজোর নাড়ু
মহালয়া শেষ। ঘনঘটা শুরু হয়েছে পূজোর। আর নাড়ু ছাড়া যেন পূজো জমেই না। ঘরেই সহজে বানিয়ে ফেলতে পারেন পূজোর নাড়ু।
চলুন জেনে নিই ঐতিহ্যবাহী কয়েকপদের নাড়ু তৈরি আর সংরক্ষণ পদ্ধতির কথা।
নারকেলের নাড়ু
প্রথমে চুলায় একটি পরিষ্কার প্যান বসিয়ে চুলার জ্বাল কমিয়ে দিয়ে তাতে দুই কাপ নারকেল কুড়ানো দিতে হবে। চার থেকে পাঁচ মিনিট সময় নিয়ে নারকেল খুব ভালো করে ভেজে নিতে হবে। তবে অতিরিক্ত ভেঁজে বাদামি করে ফেলা যাবে না। শুধু পানিটাকে শুকিয়ে নিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে তাতে এক কাপ গুড় দিয়ে দিতে হবে। গুড়কে খুব ভালো করে নারকেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে।
এবার ছয় থেকে সাত মিনিট খুব ভালো করে নাড়তে হবে। জ্বাল বাড়ানো যাবে না; অল্প আঁচেই থাকবে চুলো। এক পর্যায়ে গুড় নারকেলের সঙ্গে মিশে যাবে। অতিরিক্ত ভাজা যাবে না, নইলে নাড়ুগুলো শক্ত হয়ে যাবে। মিশ্রণটি নাড়ুর আকার পাচ্ছে কি না, তা যাচাই করার জন্য অল্প একটু মিশ্রণ হাতে নিয়ে নাড়ুর আকার দিয়ে দেখতে হবে। যদি আকার পায়, তবেই নাড়ু বানানো শুরু করতে হবে। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য এলাচি পাউডার মেশানো যেতে পারে। কিন্তু যদি এলাচির স্বাদ পছন্দ না হয়, তাহলে এটা বাদ দিলেও সমস্যা নেই।
এবারে হাতের তালুতে ঘি মাখিয়ে নিতে হবে। মাঝারি ধরনের নাড়ু বানানোর জন্য পরিমাণ মতো মিশ্রণ হাতে নিতে হবে। একে একে নাড়ুগুলো বানিয়ে নিতে হবে।
তিলের নাড়ু
খোসা ছাড়ানো সাদা তিল কিংবা কালো তিল—দুই ধরনের তিল দিয়েই বানানো যায় তিলের নাড়ু। প্রথমে দুই কাপ তিল নিন। তিল ভাজার সময় যখন সুন্দর ঘ্রাণ আসবে, তখন নামিয়ে ফেলুন। বেশি ভাজতে গেলে তিল পুড়ে তেতো হয়ে যাবে। এবার এক কাপ গুড় আর আধা কাপ পানি একসঙ্গে কড়াইয়ে জ্বাল দিন। গুড়ে আঠালো ও চ্যাটচ্যাটে ভাব এলে চুলা বন্ধ করে তিল দিয়ে দিতে হবে এরমধ্যে।
এবার নামিয়ে গরম গরম থাকা অবস্থায় নাড়ু আকারে বানিয়ে ফেলুন।
বাদাম-চিড়ার নাড়ু
একটি শুকনো প্যানে দুই কাপ চিড়া হালকা করে ভেজে তুলে রাখতে হবে। চিড়া ভেজে নিলে নাড়ু অনেকদিন মচমচে থাকে। এক কাপ পরিমাণ চিনা বাদাম ভেজে খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে নিন।
এবার কড়াইয়ে দেড় কাপ ঝোলাগুড় আর আধা কাপ পানি দিয়ে চুলার আঁচ মিডিয়ামে রেখে জ্বাল দিতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত গুড় আঠালো হয়ে না আসে। কীভাবে বুঝবেন গুড় নাড়ুর জন্য প্রস্তুত। একটা মাটিতে পানি নিয়ে ওখানে গুড় ঢাললে যদি দলা পাকিয়ে যায়, তবে বুঝতে হবে গুড় ঠিকঠাক জ্বাল হয়েছে। এবার চুলা বন্ধ করে সেই গুড়ে ভাজা চিড়া ও বাদাম দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
গুড় দিয়েই নাড়ু বানাতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। চাইলে চিনি দিয়েও একই পদ্ধতিতে বানিয়ে নিতে পারেন নাড়ুগুলো।
নাড়ু সংরক্ষণ
ফ্রিজে রেখে বেশ কিছুদিন ধরে খেতে আর বিলোতে পারবেন এই নাড়ু। তবে নাড়ুগুলো এমন বক্সে রাখতে হবে, যাতে বাতাস না ঢোকে। কাঁচের বয়ামে নাড়ু ভালো থাকে। চাইলে নাড়ু রাখার বক্সে একমুঠো মুড়ি দিয়ে রাখতে পারেন। এতে করে নাড়ুগুলো সতেজ থাকবে অনেকদিন পর্যন্ত।
Comments