পূজায় মিষ্টি বিক্রি আশানুরূপ বাড়েনি

দুর্গাপূজা, মিষ্টি, পূজা, রাজনৈতিক সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি,
ছবিটি গতকাল ঢাকার পান্থপথের প্রিমিয়াম সুইটসের আউটলেট থেকে তোলা। ছবি: রাশেদ সুমন

পূজা মানে মিষ্টির দোকানে ভিড় লেগে থাকা। কেউ পরিবারের জন্য মিষ্টি কেনেন, কেউ বা আবার প্রিয়জনকে কিংবা আত্মীয়দের বাড়িতে পাঠানোর জন্য মিষ্টি কেনেন। কিন্তু এবারের দুর্গাপূজায় রাজধানীর মিষ্টি দোকানগুলোতে আশানুরূপ বিক্রি বাড়েনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করছেন, মানুষ এবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।

অবশ্য অন্য দুই জেলার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারা এবার বেশি মিষ্টি বিক্রি করেছেন।

এখানে উল্লেখ্য, দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব এবং দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় আট শতাংশ সনাতন ধর্মালম্বী।

পাঁচ দিনের এই উৎসবে সাধারণত মিষ্টি বিক্রি বাড়ে, তাই ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই বাড়তি প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন। এ বছর ৯ অক্টোবর থেকে উৎসব শুরু হয়।

জানতে চাইলে অন্টারিওভিত্তিক প্রিমিয়াম সুইটসের বাংলাদেশের প্রধান মাহবুবুর রহমান বকুল বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারের দুর্গাপূজায় বিক্রি অনেক কমে গেছে।

তিনি বলেন, 'এ বছরের দুর্গাপূজা এমন সময়ে শুরু হয়েছে, যখন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে এক ধরনের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা কাজ করছে।'

তার ভাষ্য, 'এ ছাড়া ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে উৎসব চলাকালে ও এর আগে কয়েকটি সহিংস ঘটনা ঘটেছে। ফলে মানুষে মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।'

'তাই মানুষ উদযাপনের চেয়ে নিজের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন,' বলেন তিনি।

শীর্ষস্থানীয় মিষ্টি ব্র্যান্ড রসের অনলাইন মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ আসলাম হোসেন জানান, প্রতিবছরই দুর্গাপূজা উপলক্ষে তারা বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

তিনি বলেন, 'গত বছরের চেয়ে আমাদের বিক্রি প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিক্রি আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি, কারণ মানুষ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।'

বস সুইটস অ্যান্ড ফুডের হেড অব করপোরেট উজ্জল বর্মণ বলেন, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে তাদের বিক্রি ৪০ শতাংশ কমেছে।

মূলত রাজনৈতিক সংকট ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বিক্রি কমেছে বলে মনে করেন তিনি।

টাঙ্গাইল জেলা মিষ্টি ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি স্বপন ঘোষ একই সুরে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষ উৎসবের মেজাজে না থাকায় বিক্রি কমে গেছে।

অন্যদিকে ওয়েল ফুডের হেড অব সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং জিএম সাব্বির শাহাবুদ্দিন জানান, গত বছরের তুলনায় এবার তাদের বিক্রি ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে।

তিনি বলেন, 'চাহিদা এত বেশি যে, তা আমাদের সরবরাহকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।'

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর কালাচাঁদ মিষ্টান্নভান্ডারের মালিক নির্মলেন্দু ঘোষ জানান, গত বছর দুর্গাপূজার সময় যে পরিমাণ বিক্রি হয়েছিল, বর্তমানে তার প্রায় দ্বিগুণ বিক্রি হয়েছে।

বরিশাল নগরীর অন্যতম বৃহৎ মিষ্টি বিক্রেতা হক সুইটসের মালিক কবির হোসেন বলেন, কিছুদিন আগে থেকে মিষ্টির বিক্রি কমেছে, তবে এখন লাভ হচ্ছে।

মিষ্টি ও দইয়ের চাহিদা মেটাতে পারছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, গত পাঁচ দিনে বিক্রি অন্তত ৪০ শতাংশ বেড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh foreign adviser visit to China 2025

Foreign adviser’s China tour: 10 extra years for repaying Chinese loans

Beijing has agreed in principle to extend the repayment period for Chinese loans and assured Dhaka it will look into the request to lower the interest rate to ease Bangladesh’s foreign debt repayment pressure.

10h ago