বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মুক্তি হলে মানুষের মুক্তি সম্ভব: মির্জা ফখরুল

ঢাকেশ্বরী কেন্দ্রীয় পূজা মণ্ডপে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'আজ যে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেটা কোনো দলের নয়, ব্যক্তির নয়। এই সংকট পুরো জাতির। আজকে দেশকে বিভক্ত করে ফেলা হয়েছে। এই বিভক্তির রাজনীতি আমরা চাই না। আমরা ঐক্যের রাজনীতি চাই। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মুক্তি হলে মানুষের মুক্তি সম্ভব।'

আজ শনিবার রাতে ঢাকেশ্বরী কেন্দ্রীয় পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করে এসব কথা বলেন তিনি।

দুর্গাপূজার সপ্তমীতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয়া শুভেচ্ছা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছে, স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে ১৯৭১ সালে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম সবাই এক সঙ্গে যুদ্ধ করেছে, প্রাণ দিয়েছে এবং দেশ স্বাধীন করেছে।'

তিনি বলেন, 'স্বাধীনতার সময়ে আমাদের লক্ষ্য ছিল—কোনো ধর্ম নয়, বর্ণ নয়, কোনো সম্প্রদায় নয়, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের জন্য সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে নির্মাণ করা। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করেছি, কাজ করে চলেছি।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সব সময় বলেন, "আমি সংখ্যালঘু কথায় বিশ্বাস করি না, আমি বিশ্বাস করি এ দেশে ‍যারা আছেন সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, তাদের পরিচয় একটা তারা বাংলাদেশি।"'

মির্জা ফখরুলের ভাষ্য, 'আমাদের দুর্ভাগ্য, আজ স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও আমাদেরকে এ কথা বলতে খুব কষ্ট হয় যে আমরা ১৯৭১ সালে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, যেটা আজ ধুলায় মিশে গেছে। সেই গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে, মানুষের অধিকারগুলো হরণ করা হচ্ছে, এমনকি ন্যুনতম অধিকার—মানুষের ভোটের অধিকার—সেটার জন্য মানুষকে লড়াই করতে হচ্ছে।'

অসাম্প্রদায়িকতার বিষয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা কেবল অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসই করি না, অন্যান্য ধর্মের অধিকার রক্ষার চেষ্টা করি। তার প্রমাণ এই মণ্ডপ, এই উপাসনালয়। আপনাদের নিশ্চয় মনে থাকার কথা, সাদেক হোসেন খোকা সাহেব যখন এই ঢাকার মেয়র ছিলেন, তিনি প্রথম এই জমি উদ্ধারের ব্যবস্থা নিয়েছিলেন এবং উদ্ধার করেছিলেন। রমনা কালি মন্দির ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। আমাদেরই সরকার সেই কালি মন্দিরের জমি উদ্ধার করে মন্দির নির্মাণ করেছিল।'

'আজকে আমাদের সবার পবিত্র দায়িত্ব, এই দেশে ধর্মকে নিয়ে কোনো রকমের বাড়াবাড়ি যেন কেউ না করেন। ধর্মকে নিয়ে যেন কোনো সংঘাত না হয়, সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি না হয়। আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্র যদি থাকে সেখানে সকলের অধিকার রক্ষা করা সম্ভব,' যোগ করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আসুন এই আনন্দময় দিনে আমরা এই প্রার্থনা করি, আমাদের দেশে যেন শান্তি আসে, মানুষ যেন তাদের অধিকার ফিরে পায়, আমাদের গণতন্ত্র ফিরে আসে, মানুষ মুক্তি লাভ করে, একটি শান্তিময় প্রেমময় দেশ আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে গড়ে তুলতে পারি।'

বিএনপি মহাসচিব পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানে সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মনিন্দ্র কুমার রায়, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ধর্ম বিষয়ক সহ-সম্পাদক অমলেন্দু অপু বক্তব্য রাখেন।

ঢাকেশ্বরী পূজা মণ্ডপে পৌঁছালে মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মনিন্দ্র কুমার রায়, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্র নাথ পোদ্দারসহ নেতৃবৃন্দ বিএনপি মহাসচিবকে স্বাগত জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Specific laws needed to combat cyber harassment

There is an absence of a clear legal framework and proper definitions when it comes to cyber violence against women, speakers said at an event yesterday.They urged for specific legislation to combat such crimes..The roundtable, titled “Scanning the Horizon: Addressing Cyber Violence agains

2h ago