৮ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ গোপন করেছে এস আলম গ্রুপের এসআইবিএল

এসআইবিএল

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) ২০২৩ সাল শেষে খেলাপি ছিল ৯ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাড়পত্রের ভিত্তিতে ব্যাংকটির উদ্বৃত্তপত্রে দেখানো হয়েছে এক হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে দেখা গেছে, চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এসআইবিএল সাত হাজার ৯২৪ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ গোপন করেছে।

ঋণের বিপরীতে প্রভিশন হিসেবে ১৫৩ কোটি টাকা রাখা হলেও আমানতকারী ও অংশীদারদের স্বার্থ রক্ষায় নয় হাজার ২৮১ কোটি টাকা রাখার কথা ছিল।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা বেসরকারি ব্যাংকটিকে খেলাপি ঋণ আড়ালের সুযোগ করে দিয়েছেন।

এসআইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী জাফর আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংক সাধারণত এমন সুবিধা দিয়ে থাকে, যাতে ব্যাংকগুলো প্রকৃত পরিমাণের তুলনায় কম খেলাপি দেখাতে পারে।'

ব্যাংকের খেলাপি ঋণ গোপন করার বিষয়টি জানেন না উল্লেখ করে জাফর আলম আরও বলেন, 'আমাদের খেলাপির পরিমাণ এখন উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।'

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ডেইলি স্টারকে জানান, খেলাপি ঋণ ও ব্যাংকগুলোর প্রভিশনের প্রকৃত চিত্র দেখতে তারা প্রধান শাখাসহ অন্যান্য শাখায় গিয়েছিলেন। এসআইবিএলের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ১০টি শাখার কাগজপত্র দেখে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কিছু ব্যাংক সাধারণত ডেফারেল সুবিধা পায়, যা সবসময় গোপন রাখা হয়।'

'এসআইবিএলের ক্ষেত্রে কী হয়েছে তা জানা নেই। জেনে আপনাদের জানাবো,' যোগ করেন তিনি।

এসআইবিএলের একদল কর্মী ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানানোর একদিন পরই খেলাপি ঋণ গোপনের বিষয়টি আলোচনায় আসে।

২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ এসআইবিএল দায়িত্ব নেওয়ার আগে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে তাদের দাবি তুলে ধরেছিলেন।

তাদের অভিযোগ, ২০১৭ সালে তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এরপর থেকে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সহায়তায় এই চক্র ও তার সহযোগীরা ব্যাংকটির অংশীদারদের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে তা বিদেশে পাচার করেছে।

Comments