গরমিল সংশোধন: জুলাই-মে রপ্তানি কমেছে ১০.৮২ বিলিয়ন ডলার
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত রপ্তানি তথ্যের গরমিল সংশোধনের পর গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আগের বছরের চেয়ে ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ কমেছে।
এর আগে গত ৫ জুন ইপিবি জানিয়েছিল, গত অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানি আয় ২ দশমিক ০১ শতাংশ বেড়ে ৫১ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
কিন্তু তথ্য সংশোধনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এ সময়ে প্রকৃত রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪০ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার, যা ইপিবির দেওয়া তথ্যের চেয়ে ১০ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার বা ২১ শতাংশ কম।
অবশ্য ইপিবির দেওয়া মে মাসের রপ্তানি তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানের কাছাকাছি ছিল। দুটি প্রতিষ্ঠানই জানিয়েছে, মে মাসে চার বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছিল, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ের প্রকৃত রপ্তানি ইপিবির দেওয়া তথ্যের চেয়ে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার কম।
তার এক সপ্তাহ পর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাপ্তাহিক অর্থনৈতিক সূচকে রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করা হলো।
ইপিবির রপ্তানি তথ্যে ছয় ধরনের পরিসংখ্যানগত ভুল খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপর এই গরমিল সামনে আসে। ইপিবির ভুলের মধ্যে আছে- কাপড়ের দাম ভুল গণনা, রপ্তানি পণ্যের একাধিক গণনা, নমুনা পণ্য গণনা ইত্যাদি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, দশ মাসে ইপিবি ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ রপ্তানি বৃদ্ধির দাবি করলেও রপ্তানি মূলত ৬ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে।
ইপিবির দেওয়া তথ্যে এভাবে ব্যবধান বাড়ায় রপ্তানি তথ্যের গরমিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসে। অন্তত ১২ বছর ধরে এই তথ্যগত ব্যবধান বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই ব্যবধান ১২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দপ্তরে এক পরামর্শ সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, রপ্তানি তথ্য সংশোধন করা হয়েছে।
'এখন থেকে সঠিক তথ্য প্রকাশ করা হবে। প্রকৃত রপ্তানি তথ্য দিতে ইপিবি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।'
এই উদ্যোগের আওতায় নির্ভুল তথ্য সরবরাহ করতে রপ্তানির রিয়েল-টাইম ডেটা প্রকাশে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইপিবিতে প্রতিদিনের রপ্তানি তথ্য সরবরাহ করবে এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংক রিয়েল-টাইম বিনিময় হারের ভিত্তিতে তা হিসাব করবে।
Comments