খারাপ সময় তাড়াতে বাড়তি চিন্তা নয়, বাড়তি পরিশ্রমে চোখ লিটনের

Litton Das

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চিন্তার নাম লিটন দাসের ফর্ম। এই সংস্করণে দলের সফলতম ওপেনার তার এই খারাপ সময়ে বাড়তি চিন্তার পক্ষে নন। বাড়তি পরিশ্রম করে সুসময় ফেরাতে চান লিটন। যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের আগে বিসিবি প্রকাশিত ভিডিওতে নিজের ফর্ম ছাড়াও লিটন কথা বলেছেন বিশ্বকাপের দলের সম্ভাবনা নিয়ে, অধিনায়ক হিসেবে নাজমুল হোসেন শান্তর প্রশংসাও করেছেন তিনি।

আগের দুই বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স, এবারের আশা

'দল হিসেবে আমরা যেটা করেছিলাম ২০২১ সালের বিশ্বকাপে ততটা করতে পারিনি। ২০২২ সালে আমরা ভিন্ন কন্ডিশনে ছিলাম, বড় দলের সঙ্গে ম্যাচ জিততে। কিন্তু খারাপও হয়নি। আর আমার নিজের কথা বললে আপ টু দ্য মার্ক ছিলো না। আমি নিজে যে মানের খেলোয়াড়, যেমন পারফর্ম করা উচিত আমি সেটা করতে পারিনি। জিনিসটা যদি এভাবে বলি আগের দুই আগের দুই বিশ্বকাপে যদি একশো না রান করি, এবার যদি ১০১ রান করি তাহলে বোঝা যাবে ভাল করছি। যা করিনি, তারচেয়ে ভালো কিছুর চেষ্টা করব।'

এবার কেউ সেঞ্চুরি করতে পারবেন কিনা

'এটা সহজ কাজ না যে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে যাব আর একশো মেরে দেব। যদিও বিশ্ব ক্রিকেট অন্যভাবে চলছে। আমি আইপিএলের কথা বলব না, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট পুরো ভিন্ন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যদি দেখেন বিশ্বকাপে একশো হয়, বড় জোর দুই একজন করে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে। আমাদেরও সেই সুযোগ আছে, আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটাররা খুবই ভালো।'

সবচেয়ে স্মরণীয় বিশ্বকাপ

'চার বিশ্বকাপের মধ্যে ২০১৯ সালেরটা বেশি স্মরণীয় আমার জন্য। কারণ ওই নকটাতে বাংলাদেশ দল জিতেছিল। ২০২২ সালও স্মরণীয় হতো, আমি ভারতের বিপক্ষে যে ইনিংস খেলেছিল আমরা যদি জিততে পারতাম।'

ছন্দে ফেরা নিয়ে ভাবনা

'ভালো সময়ে পারফরম্যান্স ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি এক ম্যাচ ভালো খেলবেন, মাথার ভেতর থাকতেই পারে আমি তো ভালো খেলছি। কেয়ারলেস ভাব চলে আসে। ভালো সময়েও যে মানুষটা পরিশ্রম করে যাচ্ছে, চিন্তাধারা ভালো। আমি যদি উদাহরণ দেই তাহলে বলতে পারি তাওহিদ হৃদয়ের কথা। দেখবেন শেষ কিছু ম্যাচ ধরে খুবই ভালো করছে, এই মোমেন্টাম নিয়ে যাচ্ছে। খারাপ সময়ে আপনার বাড়তি চিন্তার কিছু থাকে না। আপনি যখন বাজে ছন্দে থাকবে যত বেশি চিন্তা করবেন খারাপই হয়ে আসবে। আপনার কাছে একটাই জিনিস থাকে, কতটা পরিশ্রম করছেন অনুশীলনে। অনুশীলনটা কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন। সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। খারাপ সময়ে যতটা ধীর-স্থির থাকা যায়, যত বাড়তি চিন্তা কম করা যায়। নিজের ক্রিকেটের উপর ফোকাস করা যায়।'

খারাপ সময়ের প্রেরণা

'আমার অনেক মানুষ আছে যারা প্রতিনিয়ত উৎসাহ দেয়। অনেক কোচ আছেন যারা উৎসাহ দেন। এই সময়ে সাহস দেওয়াটা বড় জিনিস। সবচেয়ে কাছের মানুষ আমার স্ত্রী, আমাকে সাহস দেয়। এর থেকে বড় কিছু লাগে না।'

শান্তর অধিনায়কত্ব

'খুব ভালো (শান্তর অধিনায়কত্ব)। গত কয়েকটা সিরিজ ধরে করছে অধিনায়কত্ব। আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। যেহেতু নতুন, তার কাছে তিন সংস্করণের দায়িত্ব আসছে। যা দেখছি তাতে মনে হচ্ছে উন্নতি করছে, যেকোনো মানুষের উন্নতির শেষ নাই। সে খুব ভালো করছে।'

সাকিব-মাহমুদউল্লাহর উপস্থিতি

'আমার ত মনে হয় না সাকিব ভাইকে দেখে সাকিব ভাই অনেক পুরাতন খেলোয়াড়। উনি যেভাবে সবার সঙ্গে মেশে, খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। এটা সব থেকে বড় জিনিস। রিয়াদ ভাইও এখন অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ। তারা সবাই চেষ্টা করে, আমরা ত অনেক দিন ধরে খেলছে। আরও যারা নতুন আসছে তাদের সঙ্গেও খুব ফ্রেন্ডলি। তারাও স্বস্তি বোধ করে। আমি যদি দেখতাম কেউ ১৫ বছর জাতীয় দলে খেলছে, আর আমি নতুন ঢুকছি একটু তো স্নায়ুচাপ থাকে। এই দিক থেকে সিনিয়র যারা আছে তারা এটা বুঝতে দেয়নি।'

টি-টোয়েন্টি দল হিসেবে বাংলাদেশ

'২০২২ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে আমাদের টি-টোয়েন্টি দল অনেক ভারসাম্যপূর্ণ। আমরা অনেক সিরিজও জিতেছে এরপর। এবং ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমরা ভাল দলগুলোর সঙ্গেও জিতেছি, ভালো ক্রিকেট খেলে জিতেছি। বিশ্বকাপে আলাদা চাপ থাকবে। আমরা যদি খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি এবং ধীর-স্থির থেকে থেকে যদি খেলা যায়। ভয়ডরহীন ক্রিকেট যদি খেলা যায় কোন কিছুর আউটকাম নিয়ে না ভেবে তাহলে আমাদের খুবই ভালো সুযোগ আছে।'

দর্শকের সমর্থন

'যারা মাঠে আসে খেলা দেখতে তারা অনেক বোস্টআপ করে। আমরা খেলি ১১ জন, ১৫ জন। কিন্তু আরো দর্শক যখন থাকে তখন মনে হয় দল ভারি হয়ে যায়। এটা সাহায্য করে।'

নিজের চরিত্রের যে দিক বদলাবেন

'একেক মানুষের চরিত্র একেকরকম হয়। আমাকে যারা চিনে ও জানে কাছ থেকে আমি কতটা জলি মাইন্ডের। অনেক সময় হয় আমি মাঠে থাকলে অন্যরকম চেহারা দেখা যায়। আমি চেষ্টা করব পরেরবার থেকে হাসার জন্য যাতে মানুষ খুশি হয়।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Around 100 injured in clash between students in Jatrabari

Scores of people were injured as students of three colleges clashed at Dhaka's Jatrabari today, turning the area into a battlefield

5h ago