রাজশাহীকে গুঁড়িয়ে রেকর্ড জয়ে গেরো খুলল ঢাকা
বিপিএলে রানের হিসাবে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড এক যুগ ধরে ছিল চিটাগং কিংসের দখলে। ২০১৩ সালের আসরে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে তারা ১১৯ রানে হারিয়েছিল সিলেট রয়্যালসকে। তাদের ৪ উইকেটে ১৯৩ রানের জবাবে স্রেফ ৭৪ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল প্রতিপক্ষ।
রোববার সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন করে লিখেছে ঢাকা ক্যাপিটালস। তারা দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে জিতেছে ১৪৯ রানের বিশাল ব্যবধানে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিমের সেঞ্চুরিতে ১ উইকেটে ২৫৪ রান তোলে ঢাকা। জবাবে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে না পেরে ২৮ বল বাকি থাকতে ১০৫ রানেই অলআউট হয় রাজশাহী।
এবারের আসরে আগের ছয় ম্যাচের সবকটিতে হেরে ধুঁকতে থাকা ঢাকা অবশেষে গেরো খুলেছে। ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে তারা দেখেছে পরম কাঙ্ক্ষিত জয়ের মুখ। অন্যদিকে, রাজশাহী ছয় ম্যাচ খেলে পেয়েছে চতুর্থ হারের তেতো স্বাদ।
মাত্র ৪৪ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ম্যাচসেরা লিটন ৫৫ বলে দশটি চার ও নয়টি ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১২৫ রানে। ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে বিস্ফোরক ইনিংসে পুরো ২০ ওভার খেলেন তিনি। বিপিএলে তো বটেই, স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি। ঝড় তোলায় খুব বেশি পিছিয়ে ছিলেন না তানজিদ। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে আউট হওয়ার আগে করেন ১০৮ রান। ৬৪ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ছয়টি চার ও আটটি ছক্কা। বিপিএলে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
রাজশাহীর দুর্বল বোলিংকে গুঁড়িয়ে বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে ঢাকা। তারা টপকে গেছে যৌথভাবে আগের কীর্তির মালিক দুটি দলকে। ২০১৯ সালে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ২৩৯ রান করেছিল রংপুর রাইডার্স। আর গত বছর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৩ উইকেটে ২৩৯ রান তুলেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে।
১১৮ বলে ২৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন লিটন ও তানজিদ। বিপিএলে যে কোনো উইকেটে এটি সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। আগেরটি ছিল নিউজিল্যান্ডের ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইলের। ২০১৭ সালে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে রংপুরের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২০১ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা।
যে পিচে আগের ইনিংসে ছিল চার-ছক্কার ফুলঝুরি, সেই একই পিচে রান তাড়ায় খাবি খায় রাজশাহী। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে হারায় উইকেট। তাদের পক্ষে যা একটু লড়াই করেন জিম্বাবুয়ের রায়ান বার্ল। তিনি ৩২ বলে নয়টি চারে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ঢাকার পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন আবু জায়েদ রাহী, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও ফরমানউল্লাহ।
শেষমেশ লিটন বা তানজিদের কারও সমান রানও করতে পারেনি রাজশাহী। ওই দুজনের তাণ্ডবে বিপিএলে কেবল দ্বিতীয়বারের মতো একই দলের দুই ব্যাটারের সেঞ্চুরির ঘটনা দেখা গেছে। এর আগে ২০১৯ সালে রংপুরের পক্ষে জোড়া শতরান এসেছিল ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলস ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলি রুশোর ব্যাট থেকে। প্রতিপক্ষ ছিল ভাইকিংস।
Comments