২০২৩ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের রেকর্ড ২৩৩৫ কোটি টাকা মুনাফা

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ, ব্যাংক,

গত বছর স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের মুনাফা ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বাংলাদেশে ব্যাংকটির জন্য রেকর্ড। মূলত উচ্চ সুদ আয়, ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগের কারণে ব্যাংকটির মুনাফার এই উদ্ধগতি।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে তাদের মুনাফা হয়েছে ২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, যা ২০২২ সালে ছিল ১ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা।

একইসঙ্গে দেশের শীর্ষ মুনাফা অর্জনকারী ব্যাংক হয়ে উঠেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। দেশের অন্যান্য ব্যাংকগুলোর মুনাফা এখনো এক হাজার কোটি টাকার নিচে।

জানতে চাইলে দ্য ডেইলি স্টারকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ বলেছে, বিচক্ষণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, দক্ষ তারল্য নীতির কারণে কঠিন বছরেও ব্যাংকটি ভালো করতে পেরেছে।

ব্যাংকটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, এটি গ্রাহক, সহকর্মী, নিয়ন্ত্রক এবং অন্যান্য অংশীদারদের কাছ থেকে ভালো সহায়তা ও সমর্থন পেয়েছে।

ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বার্ষিক নিট সুদ আয় ৫৮ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ১৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এদিকে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ আয় ৬৬ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এই আয়ের বেশিরভাগই এসেছে ট্রেজারি বিল ও বন্ড থেকে।

তবে ব্যাংকটির কমিশন, বিনিময় ও ব্রোকারেজ আয় ১ শতাংশ কমে ১ হাজার ২৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এজ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান আসিফ খান বলেন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী ফ্র্যাঞ্চাইজি আছে এবং এটি ব্যাংকটিকে বাংলাদেশে লাভের দিকে পরিচালনা করছে।

তিনি বলেন, 'সম্প্রতি আমরা দেখেছি ব্র্যাক ব্যাংকের মতো যেসব ব্যাংকের দক্ষ ব্যবস্থাপনা আছে সেই ব্যাংকগুলোও ভালো ফল পেয়েছে। আমি মনে করি সবাই গুণগত মানের দিকে নজর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।'

তিনি জানান, এ ছাড়া সুদের হার বাড়ছে, যা সাধারণত এসব ব্যাংকের সুদের মার্জিনের জন্য একটি ইতিবাচক লক্ষণ।

অন্যদিকে রেকর্ড খেলাপি ঋণে জর্জরিত বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থিক খাত আস্থাহীনতায় ভুগছে।

কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের মোট ঋণের তুলনায় মন্দ ঋণের পরিমাণ এখনো কম। ২০২৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ৭৮৫ কোটি টাকা, যা প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ করা ২৯ হাজার ৮২০ কোটি টাকার ঋণের ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

এই ২৯ হাজার ৮২০ কোটি টাকার মধ্যে বড় অংশ স্বল্পমেয়াদি ঋণ, যার পরিমাণ ৫ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা এবং ব্যক্তিগত ঋণ ২ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের বেশিরভাগ ঋণ ঢাকা বিভাগে দেওয়া হয়েছে, যা প্রায় ৯৩ শতাংশ বা ২৭ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা।

ইতোমধ্যে ব্যাংকটি শাখা ও এটিএম বুথের সংখ্যা কমিয়ে বাড়ি ভাড়া, বিমা, বিদ্যুৎ ইত্যাদির খরচ ১৫ শতাংশ কমিয়ে ২২ কোটি টাকা করেছে।

এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ প্রয়োজনের তুলনায় রেগুলেটরি ক্যাপিটাল, ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও ও তারল্য অনুপাত বেশি বজায় রেখেছে।

ব্যাংকটির মোট ২১ হাজার ২৩৬ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রায় পুরোটাই সরকারের ইস্যু করা ট্রেজারি বন্ড, বিল ও সুকুকে বিনিয়োগ করা।

এ ছাড়া সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশের শেয়ারে বিনিয়োগ রয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তবে পুঁজিবাজারে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের কোনো বিনিয়োগ নেই।

২০২৩ সালে ব্যাংকটির অগ্রিম আমানত অনুপাত ছিল ৬১ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ ছিল বিতরণ করা ঋণের ৩ দশমিক ২৩ শতাংশ।

এসসিবির রিটার্ন অন অ্যাসেট গত বছর ৪ দশমিক ০৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।

এই সময়ে ব্যাংকটির আমানত বেড়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা এবং ঋণ বেড়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা।

ব্যাংকটি জানিয়েছে, সুশাসন ও উচ্চ তারল্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য। এর শক্তিশালী ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির ফলে খেলাপি ঋণের অনুপাত কমেছে।

Comments

The Daily Star  | English

'We know how to fight through adversity': Women footballers eye world stage

Captain Afeida Khandakar, her voice steady with emotion, said: “This is a moment we will never forget."

2h ago