সরে দাঁড়ালেন ডি স্যান্টিস, অপ্রতিরোধ্য ট্রাম্প

২০২০ সালে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে করোনাভাইরাস প্রতিক্রিয়া কৌশল নিয়ে বৈঠক করছেন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস। ফাইল ছবি: রয়টার্স
২০২০ সালে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে করোনাভাইরাস প্রতিক্রিয়া কৌশল নিয়ে বৈঠক করছেন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস। ফাইল ছবি: রয়টার্স

আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার নিকটতম ও জনপ্রিয় প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এবং ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

গতকাল রোববার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

গত সোমবার মধ্য-পশ্চিম আমেরিকার আইওয়া প্রদেশে 'রিপাবলিকান ককাস' এ প্রাথমিক (প্রাইমারি) নির্বাচনে তিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মধ্যে ভোটে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি (৫১) ও ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিসকে (৪৫) বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প (৭৭)।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আইওয়া অঙ্গরাজ্যে বড় আকারে বিনিয়োগ করেও পরাজিত হয়ে হতোদ্যম হয়ে পড়েন ডিস্যান্টিস। নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বিশ্লেষকরা ডিস্যান্টিসকে নিয়ে আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু দ্রুত তার জনপ্রিয়তা কমতে থাকে।

ডিস্যান্টিসের বিদায়ে দুই দিন পরে নিউ হ্যাম্পশায়ারে পরবর্তী প্রাইমারিতে ট্রাম্পের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকছেন নিকি হ্যালি।

ট্রাম্পের সঙ্গে এবার সরাসরি লড়বেন নিকি হ্যালি। এক সমাবেশে হ্যালি বলেন, 'সবচেয়ে যোগ্য নারী (প্রার্থীর) জয় হোক'।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চারটি ফৌজদারি মামলা চললেও রিপাবলিকান পার্টির নির্বাচনী টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন তিনি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।

ডিস্যান্টিসের সমর্থকরা নিকি হ্যালির পরিবর্তে ট্রাম্পের প্রতি তাদের সমর্থন জানাবেন বলেই প্রত্যাশা করছেন বিশ্লেষকরা। নিউ হ্যাম্পশায়ারে ভোটারদের মাঝে পরিচালিত এক জরিপ মতে ডিস্যান্টিসের দুই তৃতীয়াংশ সমর্থক ট্রাম্পকে 'দ্বিতীয় পছন্দ' হিসেবে দেখেন।

নিউ হ্যাম্পশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপকেন্দ্রের পরিচালক অ্যান্ড্রু স্মিথ এই তথ্য জানিয়েছেন।

সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানান ডিস্যান্টিস।

তিনি ট্রাম্পকে 'অভিজ্ঞ রিপাবলিকান যোদ্ধা' হিসেবে অভিহিত করে তার প্রতি সমর্থন জানান এবং 'নিকি হ্যালির বাণিজ্যিকীকরণ প্রচেষ্টা' প্রতিহত করার আহ্বান জানান।

রোববার সন্ধ্যায় নিউ হ্যাম্পশায়ারের রোচেস্টারে এক সান্ধ্যকালীন সমাবেশে ট্রাম্প ফ্লোরিডার গভর্নরের প্রশংসা করেন এবং জানান, দুইজন (তিনি ও ডিস্যান্টিস) একসঙ্গে কাজ করে সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রতিযোগী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পরাজিত করবেন।

রিপাবলিকান দলে ট্রাম্পের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী নিকি হ্যালি। ছবি: রয়টার্স
রিপাবলিকান দলে ট্রাম্পের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী নিকি হ্যালি। ছবি: রয়টার্স

জরিপের ফল বাস্তবে পরিণত হলে, নিউ হ্যাম্পশায়ারে অন্তত ১০ শতাংশ ভোটে নিকি হ্যালিকে হারাবেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প আশা করছেন, টানা দুইটি প্রাইমারিতে জিতলে তাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।

সাউথ ক্যারোলাইনাতেও তিনি জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে এগিয়ে আছেন। সেখানে ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই অঙ্গরাজ্যে ২০১১-২০১৭ মেয়াদে গভর্নর ছিলেন নিকি হ্যালি। সেখানে পরাজিত হলে তিনিও সম্ভবত প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হবেন।

বেশিরভাগ জরিপ মতে ৭০ শতাংশ রিপাবলিকান ট্রাম্পকে পছন্দ করেন। যার ফলে ডিস্যান্টিস চেষ্টা করেন ট্রাম্প-ভক্ত ভোটারদের মন জয় করতে, এবং একইসঙ্গে, যারা তাকে ঘৃণা করেন, তাদেরকেও দলে টানার চেষ্টা চালান তিনি।

কিন্তু এই দুই নৌকায় পা দেওয়ার কৌশল কাজে আসেনি। ট্রাম্প-ভক্তদের কাছে নিজেকে ট্রাম্পের চেয়ে ভালো প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন তিনি। আর যারা ট্রাম্পের বিকল্প চান, তাদের ভোটও ডিস্যান্টিসসহ অন্যান্য প্রার্থীদের মাঝে ভাগ হয়ে যায়। যার ফলে তার জনপ্রিয়তা সার্বিকভাবে কমতে থাকে।

Comments

The Daily Star  | English

Constitution should be updated

Dr Kamal Hossain, emeritus president of Gono Forum, yesterday recommended updating the constitution.

17m ago