দিনাজপুর

হঠাৎ বাজার থেকে আলু উধাও, ইউএনও আসার পর বিক্রি শুরু

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার আজাদ মোড় সবজি বাজার থেকে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আলু কিনছেন পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন। ছবিতে তার সঙ্গে ইউএনও রফিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে একটি বাজারে আলু বিক্রি বন্ধ রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। আজ রোববার সকালে হঠাৎ করেই সব ব্যবসায়ী মিলে আলু বিক্রি বন্ধ করে দেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ক্রেতারা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বাজারে এসে আলু বিক্রির ব্যবস্থা করেন।

এই চিত্র ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার আজাদমোড় কাঁচা বাজারের। ক্রেতাদের অভিযোগ, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে আলু বিক্রি করতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আলু বিক্রি বন্ধ রাখে। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা সরকারের নির্ধারণ করা দামে পাইকারি বাজারে আলু কিনতে পারছেন না।

আলু বিক্রি বন্ধের খবর পেয়ে সাড়ে ১১টার দিকে বাজারে আসেন ইউএনও রফিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান এবং পৌরসভার মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন। তারা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে পাইকারি বাজার থেকে আলু কেনার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ব্যবসায়ীদের ৩৬ টাকা দরে কার্ডিনাল আলু বিক্রি করতে বলেন। আশ্বাস পেয়ে ব্যবসায়ীরা আবার আলু বিক্রি শুরু করেন।

জানা যায়, আগের দিন সকালে এই বাজারে দ্রব্যমূল্য পর্যবেক্ষণ করতে এসেছিলেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ব্যবসায়ীদেরকে তারা বলেন, যারা বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে আলু বিক্রি করবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হুমকির মুখে বাজার থেকে আলু সরিয়ে ফেলেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার এই বাজারে দেশি জাতের আলু বিক্রি হচ্ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে। কার্ডিনাল আলু ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। এছাড়াও দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে।

সকালে বাজারে আলু কিনতে এসে ফিরে যাওয়া রিকশা চালক তাজউদ্দীন বলেন, 'দুই কেজি আলু কিনতে গিয়েছিলাম। দোকানদার বস্তায় আলু পলিথিন দিয়ে ঢেকে লুকিয়ে রেখেছেন।'

আরেক ক্রেতা নুসরাত জাহান বলেন, 'শাক-সবজি কিনে দোকানদারকে বললাম আলু দেন। দোকানদার বললেন আলু নেই। পুরো বাজার খুঁজে দেখি কোনো দোকানেই আলু নেই। সব দোকানদার যোগসাজশে আলু গায়েব করেছেন।'

আলু বিক্রেতা মোজাফ্ফর হোসেন ঢেঁকি বলেন, 'পাইকারি বাজার থেকে কার্ডিনাল আলু কিনতে হচ্ছে ৩৫ টাকায়। আমরা বিক্রি করতেছি ৪০ টাকা কেজিতে। মাঝে পরিবহন খরচ আছে। সরকার সেই আলু বিক্রি করতে বলছে ৩৫-৩৬ টাকায়।'

আরেক ব্যবসায়ী আতোয়ার রহমান বলেন, 'হিমাগার থেকে আলু কিনতে হচ্ছে ৩৫ টাকায়। প্রশাসন তো এসব দেখে না। যত নির্যাতন আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের উপর। আমরা যদি পাইকারি বাজারে কম দামে কিনতে পারি, তবে কম দামে বিক্রি করতে সমস্যা নেই। আমরা ৩৫ টাকায় কিনে ৪০ টাকায় বিক্রি করি। প্রশাসন আবার আমাদেরকে এসেই জরিমানা করে।'

জানতে চাইলে ইউএনও রফিকুল ইসলাম বলেন, 'স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি সকাল থেকে আলু বিক্রি বন্ধ ছিল। আমাদের উপস্থিতিতে দুপুর থেকে আলু বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করবে।

ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বলেন, 'সমস্যা সমাধান হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে পরবর্তীতে বড় সমস্যা সৃষ্টি হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Banks deposit growth in 2024

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

13h ago