কারো বাড়িতে বেড়াতে গেলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

ছবি: সংগৃহীত

আত্মীয় বা বন্ধু-বান্ধবদের বাড়িতে প্রায়ই বেড়াতে যাই আমরা। তবে অন্যের বাড়িতে কী করা ঠিক আর কী করা ঠিক না তা নিয়ে দ্বিধায় থাকেন অনেকে। এ ক্ষেত্রে কিছু টিপস জানা থাকলে অতিথি হিসেবে নিমন্ত্রণকর্তার সন্তুষ্টি অর্জন সহজ হবে।

 

জানিয়ে বেড়াতে যাওয়া  

যতই কাছের মানুষ হোক না কেন, বিনা নিমন্ত্রণে ও না জানিয়ে অন্যের বাড়িতে হাজির হওয়া ভালো দেখায় না। তাই রওনা দেওয়ার আগে জানিয়ে যাওয়া ভালো। তা না হলে অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়তে পারেন। সঙ্গে অন্য বন্ধু, পোষা প্রাণী, শিশু নিয়ে গেলে সেটিও জানান।

 

 

উপহার নিয়ে যাওয়া

আতিথ্য গ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার অন্যতম উপায় হলো উপহার। সেটা সবসময় দামি হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনার এলাকার বিখ্যাত খাবার থেকে শুরু করে ফুলের তোড়া, মিষ্টান্ন বা বাড়ির সদস্যের প্রিয় যেকোনো কিছু নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট কোনো উপলক্ষে বেড়াতে গেলে সে অনুযায়ী উপহার নিয়ে গেলে নিমন্ত্রণকর্তা খুশি হবেন।

কতদিন থাকবেন তা জানানো

কারো বাড়িতে বেড়াতে গেলে কতদিন থাকবেন সে বিষয়ে আগেই নিমন্ত্রণকর্তাকে ধারণা দেওয়া উচিত। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা না করাই ভালো। নিমন্ত্রণকর্তা আরও কিছুদিন থেকে যাওয়ার জন্য বললে সার্বিক দিক বিবেচনা করে তবেই দিনক্ষণ দীর্ঘায়িত করুন।

বাড়ির নিয়ম মেনে চলা

প্রত্যেকের বাড়িতে কিছু নিয়ম থাকে। যেমন- জুতা খুলে বাড়িতে প্রবেশ করা, বড়দের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা, নির্দিষ্ট স্থানে জিনিসপত্র রাখা ইত্যাদি। এসব বিষয় নিয়ে যাতে নিমন্ত্রণকর্তা মনঃক্ষুণ্ন না হন, সেজন্য আগে থেকেই জিজ্ঞেস করে নেওয়া ভালো। এ ছাড়া বাড়ির সবাই কখন ঘুমাতে যায়, কখন ঘুম থেকে উঠে তাও জেনে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, বেড়াতে গেলে নিজের স্বাচ্ছন্দ্যের চেয়ে ওই বাড়ির সদস্যদের পছন্দ-অপছন্দকে প্রাধান্য দিতে হবে। 

মোবাইল ফোন ব্যবহার সীমিত করা 

বেড়াতে গেলে বেশি সময় ফোনে ব্যস্ত থাকলে আপনার প্রতি তাদের বিরক্তি চলে আসতে পারে। তারা মনে করতে পারে, তাদের চেয়ে আপনি অন্য কোথাও বা অন্য কারো সঙ্গে সময় কাটাতে বেশি আগ্রহী। কেউ কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহারকে ভালো চোখে নাও দেখতে পারে। তাই যথাসম্ভব নিজের জন্য নির্ধারিত ঘরে এসে ই-মেইল, টেক্সট বা কল করা ভালো।   

কাজে সাহায্য করা

অতিথি এলে প্রত্যেকেরই কাজের চাপ কিছুটা বাড়ে। তাই যতটা সম্ভব নিমন্ত্রণকর্তার কাজে সাহায্য করার চেষ্টা করতে হবে। যেমন- রান্নায় কাজ এগিয়ে দেওয়া, টেবিল সেট করা, থালা-বাসন ঠিক জায়গায় রাখা, গাড়ি চালানো, বাচ্চাদের খেয়াল রাখা, পোষা প্রাণীকে বাইরে ঘুরিয়ে আনা কিংবা বাড়ির কোনোকিছু মেরামত করা। এগুলো করতে দিতে না চাইলেও, জিজ্ঞেস করে নিলে মন্দ হয় না।

অনুমতির অপেক্ষায় ছাড়াই কাজ করা

কিছু কিছু কাজে অনুমতি চাইলে নিমন্ত্রণকর্তা অতিথিকে করতে দিতে চাইবেন না। তবে খাওয়ার পর নিজের থালা-বাসন পরিষ্কার করা, মুদি দোকান থেকে জিনিস কিনে আনা, বিছানা গোছানো, বাচ্চাদের বাইরে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি কাজ নিজের ইচ্ছায় করলে নিমন্ত্রণকর্তা আপনার প্রতি খুশি হবেন।

ব্যক্তিগত প্রসাধনী ব্যবহার করা 

বেড়াতে যাওয়ার সময় সবসময় নিজের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া ভালো। নিজের মেকআপ, পারফিউম, চিরুনি, চার্জার সঙ্গে করে নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন।

সবকিছু পরিষ্কার রাখা

কোনো অতিথি বেড়ানোর পর নিশ্চয়ই কেউ ঘরদোর পরিষ্কার করার জন্য ক্লিনার ভাড়া করতে চাইবে না। তাই বাড়ি ফেরার আগে থাকার ঘর গোছানো কি না, বাথরুমে টুথপেস্ট বা চুল পড়ে আছে কি না দেখে নিতে হবে। কোনো জিনিস ধার নিলে তা ফেরত দিতে হবে।

ধন্যবাদ জানানো

নিমন্ত্রণকর্তার কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার আগে আপনি কতটা মজা করেছেন, কোন খাবার কতটা সুস্বাদু ছিল সেটি তাকে জানালে বেশ ভালো। আপনার বাড়িতে বেড়ানোর জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।

Comments

The Daily Star  | English

Democracy ends where leadership begins

The Daily Star analysis of 25 political parties

9h ago