আদার কেজি ৫০০ টাকা!

চীনা আদার কেজি ৫০০ টাকা।
চীনা আদার কেজি ৫০০ টাকা। ছবি: স্টার

এ দফায় আদা কিংবা আদার ব্যাপারিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার কোনো কারণই নেই। ১ মাস আগে বাজারে যে চীনা আদার কেজি ছিল ২২০ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।

চীনা আদা বাদেও ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা আদার দামও বেড়েছে কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত। আর দেশি আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকার বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, বাজারে আমদানিনির্ভর এই পণ্যটির সরবরাহ এখন কম। অন্য বছরগুলোতে স্থানীয় পর্যায়ে যে পরিমাণ আদা উৎপাদিত হয়, সেটাও এবার কমেছে। এসব কারণে আদার দামে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা।

আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে মাত্র একটি দোকানে চীনা আদার দেখা পাওয়া যায়। সেখানে প্রতি কেজি চীনা আদা বিক্রি হচ্ছিল ৫০০ টাকায়। ২ দিন আগে শনিবারও আদা বিক্রি হয়েছে ৪৬০ টাকায়। আর রমজান মাসে চীনা আদার কেজি ছিল ২২০ টাকা।

এদিন কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি বার্মিজ আদা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ার আদা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা, ভিয়েতনামের আদা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা ও দেশি আদা ৩৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

আদার দাম এত বেশি কেন জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের দেশে যে আদা আমদানি হয় সেখানে প্রায় ৫০ শতাংশ চীনা আদা এবং বাকিগুলো অন্যান্য দেশের। তবে দেশে চীনা আদার চাহিদা বেশি। কয়েকদিন ধরেই চীনের আদা আসছে না। তাই বাজারে আদার কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। চীনা আদা বাজারে নেই বললেই চলে।'

আরেক আদা ব্যবসায়ী মো. জসিম বলেন, 'দেশে এ বছর আদার উৎপাদন কম হয়েছে। আমদানিও কম হয়েছে। এ জন্য দাম অনেক বেশি।' কোরবানি ঈদের আগে আদার দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গত ২ দিনে আদার পাশাপাশি পেঁয়াজের ঝাঁঝও বেড়েছে। গত শনিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৬ টাকায়। আজ সেই একই মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বাক্কার শেখ বাবু বলেন, 'পেঁয়াজ আমদানি হলে দাম কিছুটা কমতে পারে। তাছাড়া কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।'

সব ধরনের মসলার দামও বাড়তি

আজ কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮৩০ থেকে ৮৫০ টাকায়। পাশাপাশি এলাচ ১ হাজার ৬০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৫০০ টাকা, কালোজিরা ২৫০ টাকা ও প্রতি কেজি ধনিয়া বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়।

মসলা ব্যবসায়ী মেসার্স উপহার স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. বাবুল হোসেন বলেন, '২ থেকে ৩ মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি বিভিন্ন মসলার দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।'

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা আদাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ না। সব ধরনের মসলাই আমাদেরকে বাইরে থেকে আনতে হয়। দেশে আদার চাহিদা প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিকটন। গত অর্থবছরে দেশে আদার উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিকটন। এবছর উৎপাদন কমে হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিকটন। গত অর্থবছরে ১৭ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে হয়েছে ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে।'

তিনি বলেন, 'আদা চাষে সময় লাগে ৩০০ থেকে ৩১০ দিন। একই সময় অন্য ফসল চাষ করলে ২টি ফসল চাষ করা যায়। তাই মানুষ আদা চাষে কিছুটা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। আমরা প্রকল্প নিয়েছি কীভাবে আদা চাষ বাড়ানো যায়।'

চীনা আদার চাহিদা বেশি হওয়ার কারণ জানতেই চাইলে তিনি বলেন, 'এই জাতের আদা একটু মোটা হয়। তাই পরিষ্কার করতে সুবিধা। এজন্য এর চাহিদা বেশি। তবে গুণগত দিক বিবেচনায় দেশি আদা ও চীনা আদায় তেমন পার্থক্য নেই।'

 

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

4h ago