মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি আদার দাম বেড়েছে ২৫০ টাকা, পেঁয়াজে ৩৬

মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি আদার দাম বেড়েছে ২৫০ টাকা, পেঁয়াজে ৩৬
আজ শনিবার কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আদার দাম ৪৬০ টাকা এবং পেঁয়াজ ৭৬ টাকা। ছবি: সুমন আলী/স্টার

রমজান মাসে আদার কেজি ছিল ২২০ টাকা। সেই চীনা আদা এখন ৪৬০ টাকা। ঈদুল ফিতরের আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ টাকা। এখন সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৬ টাকায়। তবে রসুনের দাম তেমন একটা বাড়েনি। প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়।

আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

হঠাৎ আদার দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতারা বলেন, বাজারে সরবরাহ কম। দেশের বাইরে থেকেও চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আসছে না। এসব কারণেই দাম বেশি।

ছবি: সুমন আলী

কারওয়ান বাজারের আদা ও পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. হারেজ আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আদার দাম বাড়ার কারণ হলো বাজারে আদার সরবরাহ কম। পাইকারি বাজারে দাম বেশি। বিদেশ থেকেও পণ্য কম আসছে।'

পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ বিষয়ে তিনি বলেন, 'অনেকে পেঁয়াজ আটকে রেখে কম করে বিক্রি করছে। শুরুর দিকে পেঁয়াজের দাম কম ছিল, কারণ তখন পেঁয়াজ কাঁচা ছিল। বাড়িতে সেভাবে রাখা যেত না। এখন মানুষ বেশি বেশি পেঁয়াজ কিনে বাড়িতে সংরক্ষণ করছেন।'

আরেক আদা ব্যবসায়ী রবিউল শেখ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চীন থেকে আদা আসা কমেছে। তা ছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে জাহাজ আসতে পারেনি। এসব কারণে আদার দাম বেড়েছে। রমজান মাসে যে আদা বিক্রি করতাম ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, সেই আদা আজ বিক্রি করছি ৪৬০ টাকায়।'

তবে বাজারে আজ দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়।

দেশি আদার চেয়ে চীনার আদার দাম এত বেশি কেন জানতে চাইলে রবিউল বলেন, 'তরকারিতে কিন্তু চীনা আদার চেয়ে দেশি আদার স্বাদ বেশি। কিন্তু দেশি আদা পরিষ্কার করতে, খোসা ছেলাতে সমস্যা হয়। চীনা আদার ক্ষেত্রে সেই সমস্যা নেই। এ কারণে চীনা আদার দাম বেশি।'

আরকে পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রতন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক সপ্তাহ আগেও ১ পাল্লা (প্রতি ৫ কেজি) পেঁয়াজের দাম ছিল ২৭০-২৮০ টাকা। আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকায়। রমজান মাসে এই পেঁয়াজ ছিল ১৫০ টাকা পাল্লা। মানুষ এখন সংরক্ষণ করে রাখার জন্য কিনছেন বেশি। তা ছাড়া দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আসছে না। এ কারণে দাম একটু বেশি।'

ছবি: সুমন আলী/স্টার

আজ কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা ৪০-৫০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, লাউ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৬ টাকায়।

প্রতি ডজন মুরগির ডিম (লাল) বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ১৮০ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকায়, গরুর মাংস ৭৫০ টাকায়, ছাগলের মাংস ১ হাজার টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।

ছবি: সুমন আলী/স্টার

শ্রীপুর ব্রয়লার হাউসের মুরগি বিক্রেতা মো. ফাইয়াজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আপাতত ব্রয়লার মুরগি দাম কমার সম্ভাবনা নেই।'

কারওয়ান বাজারে আকারভেদে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা কেজি। পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, রুই ৩৫০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়, শোল মাছ ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়, শিং ও মাগুর মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা করে।

ছবি: সুমন আলী/স্টার

মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহীন বলেন, 'মানুষের হাতে এখন টাকা কম। মাছ বিক্রি গত বছরের তুলনায় হিসাব করলে এ বছর ৩০-৪০ শতাংশ কমেছে।'

বাজারে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায় এবং প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি ১২৫-১৩০ টাকায়।

গত ১০ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পরিশোধিত খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি কেজি ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত পরিশোধিত চিনির দাম প্রতি কেজি ১২৫ টাকা।

সরকার নির্ধারিত দামে খোলা চিনি বিক্রি না করার কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মেসার্স আমিন জেনারেল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মিল থেকে আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরকেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। প্যাকেটে যে মূল্য দেওয়া আছে, আমাদের কাছেও সেই মূল্যই নেওয়া হচ্ছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
Mahdi Amin, adviser to BNP acting chairperson Tarique Rahman

‘BNP’s 31-point charter embodies public will’

Mahdi Amin, adviser to BNP acting chairperson Tarique Rahman, speaks to The Daily Star

14h ago