মা দিবসে থাকুক কিছু বিশেষ আয়োজন

ছবি: সংগৃহীত

তারে জামিন পার চলচ্চিত্রের ছোট্ট ঈশানের চরিত্রের কথা মনে আছে? নিজের ভেতরের কষ্ট মাকে জানানোর আকুতি, মাকে ফেলে স্কুল যেতে ভীষণ মন খারাপ করা, ভরসার জায়গায় মাকে খোঁজা, মা ছাড়া সীমাহীন অসহায়ত্ব বারবার ফুটে উঠেছে চলচ্চিত্রে।

কিংবা রবীন্দ্রনাথের ছুটি গল্পের ফটিক চরিত্রের কথা জানা সবারই। মামার বাসায় ভীষণ অসুস্থ হয় ফটিক। জ্বরের ঘোরে সে মায়ের কাছে যাওয়ার বায়না ধরে। জাহাজে করে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন দেখে। স্নেহহীন প্রতিকূল পরিবেশে সন্তানের জন্য মায়ের কোলই যেন একমাত্র আশ্রয়।

শুধু গল্প কিংবা চলচ্চিত্র নয়, বাস্তবেও সব সন্তানের পরম এবং প্রথম চাওয়াই মা। প্রবাদ আছে, 'ঈশ্বর সব জায়গায় থাকতে পারেন না, এ কারণে তিনি মাকে পাঠিয়েছেন।'

মায়েদের নিয়ে যে কোনো আলাপই কম মনে হবে। পৃথিবীতে এনে লালন পালন করার এই অসীম ত্যাগের কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই কোনো সন্তানেরই। তবু মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসা জানাতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে উদযাপিত হয় মা দিবস। অনেকে মনে করেন শুধু একদিন নয়, প্রতিদিনই মা দিবস। কিন্তু একটা দিন যদি মায়েদের একটু বিশেষ কদর করা যায়, ভালোবাসি বলা যায় -তাও কম আনন্দের নয়।

সারাবিশ্বের অনেক দেশে প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস পালিত হয়ে আসছে।

চাইলেই মাকে দেখতে পারার, মায়ের ঘ্রাণ নিতে পারার, মায়ের কণ্ঠ শোনার কিংবা ছুঁয়ে দেখতে পারার মতো ভাগ্যবান সন্তানরা বিশেষ কোনো আয়োজন রাখতে পারেন এই মা দিবসে। ফুল,ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় ছোটখাট বিভিন্ন উপহার দেওয়ার সুযোগ তো থাকছেই। এ ছাড়া ভিন্ন চিন্তাও করতে পারেন।

  • ছোট হলেও সোনার আংটি, নাকফুল বা কানের দুল উপহার দিতে পারেন মাকে সামর্থ্য থাকলে। সন্তানের চাহিদা এবং আনন্দের জন্য নিজেদের ইচ্ছাগুলোকে বিসর্জন দিতে দিতেই হুট করে যেন বয়স বেড়ে যায় তাদের। নিজের জন্য দামি কিছু কেনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এক সময়। গয়না এক্ষেত্রে টেকসই উপহার।
  • মা দিবসকে কেন্দ্র করে রেস্তোরাঁতে থাকে বিশেষ খাবার আয়োজন। খেতে যেতে পারেন এদিন মাকে নিয়ে। করতে পারেন মায়ের পছন্দের রান্না। সরাসরি সুযোগ না থাকলে সারপ্রাইজ ডিশ পাঠিয়ে দিতে পারেন মায়ের ঠিকানায়।
  • মাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন বিশেষ এই দিনে। কিছুটা সময় মোবাইল, ল্যাপটপ, কাজ রেখে প্রকৃতি ও মাকে নিয়েই নির্ভেজাল সময় কাটাতে পারেন।
  • দূরে থাকলে মা দিবসের দিন হুট করে চলে আসতে পারেন মায়ের কাছে। অবাক তো হবেনই, হঠাৎ সন্তানকে দেখে খুশিও হবেন তিনি।
  • নিজের যত্ন নেওয়ার সময় পান না কিংবা নিজের ব্যাপারে উদাসীন থাকেন বেশিরভাগ মায়েরাই। তাই মা দিবস উপলক্ষে পার্লারের গিফট ভাউচার উপহার দিতে পারেন মাকে। নিজের পছন্দমতো সার্ভিস বাছাই করে নিতে পারবেন তিনি।
  • বাঙালি নারী মাত্রই শাড়িতে অনন্য। মায়ের সঙ্গে গল্প করলেই জেনে নিতে পারবেন, কখনো হয়তো তিনি দামি বেশি কাউন্টের কোনো জামদানির স্বপ্ন দেখতেন। কেনা হয়নি। কেউ বা বলবেন পছন্দের রাজশাহী সিল্ক কিংবা কাতান হারানোর গল্প। যা নিয়েই আফসোস করুক না কেন, সেই শাড়িই মায়ের পছন্দের রঙের কিনে হাজির হতে পারেন বিশেষ দিনে।
  • মা নিয়ে কবিতা, গান কিংবা নিজের লেখনি রেকর্ড করে পাঠিয়ে দিতে পারেন। কিছুই না পারলে স্মৃতিকাতরতা বা ছোটবেলার মায়ের সঙ্গে কোনো বিশেষ স্মৃতিটুকুই গুছিয়ে রেকর্ড করে পাঠিয়ে দিতে পারেন মাকে। এতে চাইলে পরেও সন্তানের এই আদরমাখা কণ্ঠ শুনতে পারবেন তিনি যখন তখন।
  • মায়ের কাছের বন্ধুদের দাওয়াত দিয়ে, আনন্দমুখর সময় উপহার দিতে পারেন সবাইকে৷ আয়োজনের দায়িত্বও সেক্ষেত্রে নিজের কাঁধেই নিন।
  • বড় স্ক্রিনে মাকে নিয়ে চলচ্চিত্র উপভোগ করতে পারেন। সিনেপ্লেক্সে না গেলে প্রজেক্টরেও দেখে নিতে পারেন। কিছু স্ন্যাকসও রাখুন সঙ্গে। এক্ষেত্রে মাঝে কোনো এক সময়ে আপনার মাকে নিয়ে করা সুন্দর একটি ভিডিও প্লে করে দিন। মা  অবাক হবেন। 
  • মাকে বাগানচর্চার জন্য বারান্দা উপযোগী ছোট ফুল বা ফলগাছ কিংবা ছাদবাগানের জন্য গাছ এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উপহার দিতে পারেন। সন্তান বড় হয়ে যাওয়ার পর একটা বয়সে এসে বেশিরভাগ সময় একাকীত্বের মধ্যে কাটান অধিকাংশ বাবা-মা। এ সময়টা ভালো কাটবে গাছপালনে কিছুটা ব্যস্ত থাকলে।

পৃথিবীর সব মা থাকুক সন্তানদের ভালোবাসায় আর প্রার্থনায়।

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles, vandalise property

1h ago