উত্তর কোরিয়ায় খাদ্য সংকটের আশংকা, জরুরি বৈঠকে কিম

কৃষি বিষয়ক জরুরি বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। ছবি: রয়টার্স
কৃষি বিষয়ক জরুরি বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। ছবি: রয়টার্স

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন কৃষি খাতের উন্নয়ন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে একটি বৈঠক শুরু করেছেন।

আজ সোমবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম কেসিএনএর বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।

কিছু বিশ্লেষকের মতে, দেশটিতে তীব্র খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যার ফলে এই জরুরি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। 

প্রতিবেদন মতে, রোববারের এই বৈঠকে পল্লী অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নের কোন পর্যায়ে রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

কেসিএনএ জানিয়েছে, এই চলমান বৈঠকে কৃষি খাতের 'সবচেয়ে জরুরি ও তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে' এরকম বিষয়গুলো এবং 'জাতীয় আয় বাড়াতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে' এরকম কাজগুলো চিহ্নিত করা হবে।

কেসিএনএ জানায়নি বৈঠকে কিম কোনো বক্তব্য দিয়েছেন কী না, বা এটি কতক্ষণ ধরে চলবে। দল ও মন্ত্রীসভার জ্যেষ্ঠ সদস্যরাও এ বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন।

এটাই কিমের রাজনৈতিক দলের প্রথম বৈঠক, যেখানে শুধু কৃষি খাত নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

এই বৈঠক এমন সময় এলো যখন দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার জানিয়েছে, তাদের বিশ্লেষণ মতে, সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয়ার খাদ্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

সিউলের কর্মকর্তা এই বৈঠককে কার্যত ভয়াবহ খাদ্য ঘাটতি মেনে নেওয়ার সমতুল্য বলে দাবি করছেন। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ৩৮ নর্থ প্রোগ্রাম নামের নিরীক্ষা সংস্থা জানায়, '(উত্তর কোরিয়ায়) খাদ্য সরবরাহ দেশের জনগণের ন্যুনতম চাহিদার চেয়েও কমে গেছে'। সংস্থার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি ৯০ এর দশকের দুর্ভিক্ষের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্য ঘাটতির পেছনে মূল কারণ বৈরি আবহাওয়ার মাঝে শস্যের ফলন আশানরূপ না হওয়া। লকডাউন ও করোনাভাইরাসের কারণে চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ হয়ে বাণিজ্য কমে যাওয়ায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। 

এছাড়াও, নিষিদ্ধ ঘোষিত পারমাণবিক ও ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি অব্যাহত রাখার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে উত্তর কোরিয়া ব্রাত্য।

গত বছর দেশটির শস্য উৎপাদনের প্রাক্কলিত পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ টন। এটি ২০২০ এর চেয়ে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কম। দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য মতে, উত্তর কোরিয়া ২০১২ থেকে ২০২১ এর মাঝে প্রতি বছর গড়ে ৪৪ লাখ থেকে ৪৮ লাখ টন শস্য উৎপাদন করে।

দেশের ২ কোটি ৫০ লাখ জনগোষ্ঠীর খাবারের জোগান দিতে উত্তর কোরিয়ার বৈশ্বিক খাদ্য চাহিদা ৫৫ লাখ টন শস্য। এ বছর প্রায় ১০ লাখ টনের ঘাটতি রয়েছে। এর আগে অনানুষ্ঠানিকভাবে চীন থেকে শস্য আমদানি করে এই ঘটতির অর্ধেক মিটিয়েছে  উত্তর কোরিয়া।

খাদ্য সংকটের মোকাবিলায় উত্তর কোরিয়া কী উদ্যোগ নেবে, তা নিশ্চিত নয়।

দেশের সম্পদ সীমিত হওয়া সত্ত্বেও কিম জং উন আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছেন। উত্তর কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান দিতে এবং আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে কিম এসব উদ্যোগ নিয়েছেন। ২০২২ সালে রেকর্ড পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার পর উত্তর কোরিয়া এ মাসে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Exporters fear losses as India slaps new restrictions

Bangladesh’s exporters fear losses as India has barred the import of several products—including some jute items—through land ports, threatening crucial trade flows and millions of dollars in earnings.

2h ago