হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে মৃত্যু বেড়ে ৮৯, নিখোঁজ ১ হাজারেরও বেশি

দাবানলে হাওয়াইর মাউই দ্বীপের লাহাইনা শহরের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ধ্বংসযজ্ঞ। ছবি: রয়টার্স
দাবানলে হাওয়াইর মাউই দ্বীপের লাহাইনা শহরের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ধ্বংসযজ্ঞ। ছবি: রয়টার্স

হাওয়াইর মাউই দ্বীপে দাবানলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯ হয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গত ১ শতকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের ঘটনা।

গতকাল শনিবার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

৪ দিন আগে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়া দাবানলে অবকাশ যাপনের জন্য বিখ্যাত শহর লাহাইনার বেশিরভাগ অবকাঠামো পুড়ে ছাই হয়ে যায়। শনিবারও প্রশিক্ষিত কুকুরের সহায়তায় উদ্ধারকর্মীরা মরদেহ উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। 

লাহাইনার পুনর্নির্মাণের প্রাক্কলিত খরচ ধরা হয়েছে সাড়ে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রায় ২ হাজার ১০০ একর ভূখণ্ড পুড়ে গেছে এবং ২ হাজার ২০০ অবকাঠামো ধ্বংস বা ক্ষতির শিকার হয়েছে।

গভর্নর জশ গ্রিন শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সতর্ক করেন, এখনো মরদেহ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে এবং নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় জরুরী পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা সংস্থার (এফইএমএ) কর্মকর্তা জেরেমি গ্রিনবার্গ বিবিসিকে জানান, ১ হাজারেরও বেশি মানুষ এখনো নিখোঁজ আছেন। 

কিছু বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন, সময়মতো ও সঠিকভাবে বাসিন্দাদের আগুন সম্পর্কে সতর্ক করা হলে হতাহতের সংখ্যা আরো কমতো। কিছু মানুষের বাসার একদম কাছাকাছি দাবানলের আগুন চলে আসার আগে তারা বিষয়টি সম্পর্কেই কিছুই জানতে পারেনি। অনেকে প্রশান্ত মহাসাগরে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হন। 

প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করার জন্য দ্বীপে সাইরেন ব্যবস্থা চালু থাকলেও দাবানলের সময় একটি সাইরেনও বাজেনি। বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত হওয়ায় মানুষকে সতর্ক করা যায়নি।

দাবানলে মাউই দ্বীপের অসংখ্য বাড়িঘর ও জমি পুড়ে গেছে। এরকম একটি পুড়ে যাওয়া বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছে একটি বেড়াল। ছবি: রয়টার্স
দাবানলে মাউই দ্বীপের অসংখ্য বাড়িঘর ও জমি পুড়ে গেছে। এরকম একটি পুড়ে যাওয়া বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছে একটি বেড়াল। ছবি: রয়টার্স

অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যান লোপেজ জানান, তিনি আগুন শুরুর আগের ও পরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া নিরীক্ষণের জন্য একটি তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছেন।

স্থানীয় কর্মকর্তারা এই ভয়াবহ বিপর্যয়ের জন্য যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ধসে পড়া, সমুদ্রে ঝড়ের কারণে সৃষ্ট ঝড়ো বাতাস ও বেশ খানিকটা দূরে অপর একটি দাবানলকে দায়ী করেছেন। এসব কিছু মিলিয়ে জরুরী পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত সংস্থাগুলো নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করতে পারেনি। 

এর আগে ১৯৬০ সালে সর্বশেষ সুনামিতে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে ৬১ জন মারা গিয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দাবানলের কারণে সর্বোচ্চ ৪৫৩ জন নিহতের ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯১৮ সালে, মিনেসোটা ও উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে। 

 

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s deadly order

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

7h ago