গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, চীনের নিন্দা
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে কড়া সমালোচনা করেছে নিরাপত্তা পরিষদের অপর সদস্য চীন।
আজ বুধবার বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে।
বেইজিং বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগ 'ভুল বার্তা দিয়েছে' এবং এটি কার্যত 'হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সংকেত' দেওয়ার মতো।
হোয়াইট হাউসের দাবি, আলজেরিয়ার এই প্রস্তাব যুদ্ধ অবসানের চলমান আলোচনাকে 'বিপদে' ফেলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে অপর একটি প্রস্তাব আনা হয়েছে। সেখানে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ও রাফাহ শহরে সর্বাত্মক হামলা না চালানোর বিষয়ে ইসরায়েলের প্রতি হুশিয়ারি রয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৩ সদস্য রাষ্ট্র আলজেরিয়ার প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের নীতি অনুযায়ী, একজন স্থায়ী সদস্য ভেটো দিলেই প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটে এই প্রস্তাবের অকাল মৃত্যু ঘটে। যুক্তরাজ্য ভোট দেওয়ায় বিরত থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রে এই আচরণে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে।
এই ভেটোর প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন জানান, চলমান কূটনৈতিক আলোচনার সঙ্গে আলজেরিয়ার প্রস্তাব সাংঘর্ষিক, এই দাবি 'একেবারেই ভিত্তিহীন।'
'গাজার যে পরিস্থিতি, তাতে পরোক্ষভাবেও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে অসম্মতি জানানোর সঙ্গে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখার সবুজ সংকেত দেওয়ার কোনো পার্থক্য নেই', যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'এই সংঘাতের কারণে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে এবং আরও বড় আকারে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।'
'গাজায় যুদ্ধের দাবানল নেভাতে পারলেই কেবল আমরা সমগ্র অঞ্চলকে নরকের আগুন থেকে রক্ষা করতে পারব', যোগ করেন তিনি।
জাতিসংঘে নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত ওমর বেঞ্জামা জানান, 'দুর্ভাগ্যজনকভাবে নিরাপত্তা পরিষদ আবারও ব্যর্থ হয়েছে।'
'আপনারা আপনাদের বিবেক যাচাই করুন। চিন্তা করুন, ইতিহাসে আপনাদেরকে কীভাবে বিচার করবে', যোগ করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেন। ফ্রান্সের প্রতিনিধি নিকোলাস দে রিভিয়েরে 'গাজার বিপর্যয়কর পরিস্থিতি বিবেচনায়' এই প্রস্তাব পাস না হওয়া হতাশা প্রকাশ করেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ১৬০ জন নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন প্রায় ২৫০ জন মানুষ।
সেদিন থেকে গত প্রায় চার মাসে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক নির্বিচার হামলায় ২৯ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
Comments