রমজানের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি না দিলে রাফাহর অভিযান শুরু: ইসরায়েল

স্যাটেলাইট মানচিত্রে রাফাহ অঞ্চল। ছবিতে এ শহরে আশ্রয় নেওয়া অসংখ্য বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের দেখা যাচ্ছে। ছবি: এএফপি
স্যাটেলাইট মানচিত্রে রাফাহ অঞ্চল। ছবিতে এ শহরে আশ্রয় নেওয়া অসংখ্য বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের দেখা যাচ্ছে। ছবি: এএফপি

রমজান মাস শুরুর আগে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। হামাস এই সময়সীমার মধ্যে সব জিম্মিদের মুক্তি না দিলে গাজার দক্ষিণে অবস্থিত সীমান্তবর্তী শহর রাফাহর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক হামলা চালাবে ইসরায়েল।

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

এই সময়সীমার কথা জানিয়েছেন ইসরায়েলি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্তজ।

সামরিক বাহিনীর সাবেক চিফ অফ স্টাফ গ্যান্তজ গতকাল রোববার জেরুজালেমে অনুষ্ঠিত মার্কিন ইহুদি নেতাদের এক সম্মেলনে বলেন, 'গোটা বিশ্বকে জানতে হবে, এবং হামাস নেতাদেরও জানতে হবে—যদি রমজানের মধ্যে আমাদের জিম্মিরা বাড়িতে ফিরে না আসে, তাহলে সব জায়গায় যুদ্ধও ছড়িয়ে পড়বে, যার মধ্যে রাফাহ অঞ্চলও অন্তর্ভুক্ত'।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ মার্চ থেকে রমজান মাস শুরু হতে যাচ্ছে।

এর আগে ইসরায়েলি সরকার রাফাহর হামলার বিষয়ে কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেনি। যুদ্ধের শুরু থেকে 'নিরাপদ অঞ্চল' ঘোষিত রাফাহ সীমান্তে গাজার অন্যান্য অংশ থেকে অসংখ্য ফিলিস্তিনি মানুষ আশ্রয় নেন। এ মুহূর্তে প্রায় ১৭ লাখ ফিলিস্তিনি সেখানে অবস্থান করছেন।

এ অঞ্চলে হামলা হলে অসংখ্য বেসামরিক মানুষ হতাহত হবে, এই আশঙ্কায় আন্তর্জাতিক মহল থেকে হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। চার মাস ব্যাপী যুদ্ধে গাজার বড় শহরগুলোর মধ্যে শুধু রাফাহর বিরুদ্ধে এখনো সর্বাত্মক স্থলহামলা চালায়নি ইসরায়েল।

গাজা-মিশর সীমান্তের রাফাহ শহরে তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স
গাজা-মিশর সীমান্তের রাফাহ শহরে তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুরোধ, আন্তর্জাতিক মহলের চাপ—কোনো কিছুই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে টলাতে পারছে না। তিনি জোর দিয়ে বলছেন, রাফাহর অভিযান ছাড়া যুদ্ধ শেষ করা সম্ভব নয়।

গ্যান্তজ আরও জানান, সমন্বিত আকারে অভিযান চালানো হবে এবং ইতোমধ্যে বেসামরিক ব্যক্তিদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।

তিনি 'বেসামরিক প্রাণহানি ন্যুনতম পর্যায়ে রাখার' প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 

তবে 'এই নিরাপদ জায়গার' বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না ইসরায়েলি নেতারা।

ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্তজ। ফাইল ছবি: এএফপি
ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্তজ। ফাইল ছবি: এএফপি

এসব মন্তব্য এমন সময় এলো যখন কয়েক সপ্তাহ ধরে যুদ্ধবিরতির আলোচনা হলেও তা থেকে কোনো ফল আসেনি। মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার সপ্তাহান্তে জানিয়েছে, আলোচনায় ইতিবাচক ফল আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

ইসরায়েলের প্রধান মিত্র ওয়াশিংটন হামাসের হাতে বন্দি ১৩০ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ করছে।

ইসরায়েলের ধারণা, এই জিম্মিদের অনেককেই রাফাহর বিভিন্ন অংশে লুকিয়ে রাখা হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে হামাসের শীর্ষ নেতারাও মাটির নিচে লুকিয়ে আছেন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ১৬০ জন নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন প্রায় ২৫০ জন মানুষ।

ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক নির্বিচার হামলায় অন্তত ২৮ হাজার ৮৫৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

Comments

The Daily Star  | English

Cops get whole set of new uniforms

The rules were published through a gazette yesterday, repealing the previous dress code of 2004

23m ago