হামাসের হামলার পরিকল্পনা নথি এক বছর আগেই পেয়েছিল ইসরায়েল: নিউইয়র্ক টাইমস

ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার সময় হামাস যোদ্ধারা প্রহরা দেন। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার সময় হামাস যোদ্ধারা প্রহরা দেন। ছবি: রয়টার্স

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র বাহিনী হামাস। এতে নিহত হন এক হাজার ২০০ মানুষ ও জিম্মি হয় প্রায় ২৪০ জন। সেদিন থেকেই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা সাত সপ্তাহ ধরে চলে। ইসরায়েলি নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়, যার মধ্যে ৪০ শতাংশই শিশু।

হামাসের হামলার পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য এক বছর আগেই ইসরায়েলের হাতে এসেছিল বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে তারা এমন তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ৪০ পাতার একটি নথি হাতে পান, যার সাংকেতিক নাম দেওয়া হয় 'জেরিকো ওয়াল'। নথিতে যেভাবে বর্ণনা দেওয়া হয়েছিল, বাস্তবে ঠিক সেভাবেই হামলা চালিয়েছে হামাস।

তবে এই নথি হাতে পেয়েও ইসরায়েলের সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তা গুরুত্ব দেয়নি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, পরিকল্পনাটিকে গুরুত্ব না দিয়ে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা উল্টো মন্তব্য করেন, 'এটি বাস্তবায়ন করা হামাসের পক্ষে প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি।'

হামাসের পরিকল্পনা নথির ইংরেজি অনুবাদ বিশ্লেষণ করে নিউইয়র্ক টাইমস দেখেছে, এতে হামলার নির্দিষ্ট দিন উল্লেখ করা না থাকলেও গাজা উপত্যকার আশেপাশের ইসরায়েলি সামরিক অবস্থানগুলোতে একযোগে হামলার কথা বলা হয়।

৭ অক্টোবর হামাস এই 'ব্লুপ্রিন্ট' বা হামলার 'নীলনকশা' পুরোপুরিভাবেই অনুসরণ করেছে। নথিতে হামলার শুরুতে নজিরবিহীন রকেট হামলার মাধ্যমে ইসরায়েলকে হতবিহ্বল করা, নিরাপত্তা ক্যামেরা অকেজো করতে ড্রোন হামলা, সীমান্তবর্তী এলাকায় মেশিনগানের মাধ্যমে হামলা এবং প্যারাগ্লাইডার, মোটরসাইকেল বা পায়ে হেঁটে সেনাদের গণহারে সীমান্তে অনুপ্রবেশের কথা উল্লেখ ছিল—যার সবই ঘটেছে ৭ অক্টোবরে।

নথিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান ও সংখ্যা সম্পর্কেও নিখুঁত ও বিস্তারিত তথ্য ছিল। হামাসের হাতে কীভাবে এত নিখুঁত তথ্য এসে পৌঁছাল এবং ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর ভেতর তাদের কোনো গুপ্তচর রয়েছে কি না, সেটা নিয়েও এখন আলোচনা শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এই নথি ইসরায়েলের সামরিক ও গোয়েন্দা বাহিনীর নেতাদের সবার হাতে পৌঁছালেও তারা সেটিকে 'উচ্চাভিলাষী, অবাস্তব ও হামাসের সক্ষমতার বাইরে'র পরিকল্পনা হিসেবে ভেবে নেন।

তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বা অন্যান্য শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা এই নথি দেখেছেন কি না, তা এখনো জানা যায়নি

টানা সাত সপ্তাহ ধরে গাজায় স্থল ও বিমানহামলা চালানোর পর দুই পক্ষের জিম্মি ও বন্দি বিনিময়ের শর্তে গত সাত দিন ধরে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। কাতারের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি হয়েছে। 

আজ শুক্রবার চলমান যুদ্ধবিরতির শেষ দিন। 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

UK govt unveils 'tighter' immigration plans

People will have to live in the UK for 10 years before qualifying for settlement and citizenship

2h ago