ফুলকপির ক্রেতা নেই মেহেরপুরে

ছবি: সংগৃহীত

ক্রেতা সংকটে শীতকালীন জনপ্রিয় সবজি ফুলকপি বিক্রি করতে পারছেন না মেহেরপুরের কৃষক।

গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নের কৃষক আবুল হোসেন ১৩ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন।

এর মধ্যে আগাম আট বিঘা জমির ফুলকপি তিনি বিক্রি করেছেন। সম্প্রতি তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মৌসুমের শুরুতে দাম ভালোই ছিল। কিন্তু এখন ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না। বিনামূল্যে ফুলকপি নিয়ে মাঠ পরিষ্কার করার মানুষও নেই।'

সাহারবাটি গ্রামেরই আরেক কৃষক কফিল উদ্দিন তিন বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন। তবে তিনি এখনো বিক্রি করতে পারেননি। কফিল উদ্দিন বলেন, 'গতবার বাজারে সারা বছরই ফুলকপির চাহিদা ছিল। এবার শীতের মাঝামাঝিতে এসেই চাহিদা শেষ হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি।'

চলতি বছর প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন কৃষকরা। এর বড় অংশই ফুলকপি।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার ডেইলি স্টারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'যে ফসলের দাম বেশি থাকছে, পরবর্তী বছরে সেই ফসল বেশি চাষ করছেন কৃষক। এতে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা কমে যাচ্ছে।'

সমন্বিত চাষের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, 'পাঁচ-১০ বিঘা জমিতে একসঙ্গে এক ফসল চাষ না করে, ভিন্ন ভিন্ন ফসল চাষ করতে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না।'

এবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে পাইকারি ক্রেতা না আসায় দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আবুল হোসেন। তিনি বলেন, 'আমাদের ছোট্ট জেলায় ক্রেতা খুব বেশি নেই। প্রতি বছর ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে অনেক পাইকারি ক্রেতা আসেন। এবারও মৌসুমের শুরুতে তাদের আনাগোনা ছিল। কিন্তু দাম কমে যাওয়ায় তারা আসছেন না।'

প্রতি বিঘা ফুলকপি চাষে একজন কৃষককে ব্যয় করতে হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অনেক কৃষক ফুলকপি চাষ করে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান সাহারবাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, 'আমার পরিচিত কয়েকজন কৃষক ঋণ নিয়ে ফুলকপি চাষ করেছেন। দাম না পাওয়ায় তারা ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না। স্থানীয় বাজারে পাঁচ টাকা পিস পাওয়া যাচ্ছে বড় বড় ফুলকপি।'

মেহেরপুর শহরের বাসিন্দা মামুন বলেন, '১০ টাকায় দুই পিস ফুলকপি পাওয়া যাচ্ছে। এটা তো একজন বিক্রেতারই মুনাফা, কৃষক কী পাচ্ছেন জানি না।'

Comments

The Daily Star  | English

Parking wealth under the Dubai sun

The city’s booming real estate has also been used by Bangladeshis as an offshore haven to park wealth for a big reason

9h ago