রাজশাহীতে ১০ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত, শহরের প্রধান সড়ক-আবাসিক এলাকা জলাবদ্ধ

রাজশাহীতে রেকর্ড বৃষ্টিপাতে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা ও প্রধান সড়ক জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। জলাবদ্ধ রাস্তায় মাছ ধরতে দেখা গেছে স্থানীয়দের। বর্ণালী মোড় এলাকার বাসিন্দারা রাস্তায় নৌকা ভাসিয়েছেন। 

স্থানীয় আবহাওয়া অফিস দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৪৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে।

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রাজশাহীতে গতকাল বুধবার থেকে একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। একদিনে গত ১০ বছরে এটাই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।

বর্ণালী মোড় এলাকায় রাস্তায় নৌকা দিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। ছবি: সংগৃহীত

বৃষ্টিতে নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকা, উপশহর হাউজিং এস্টেট এলাকা, তেরোখাদিয়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর নিমজ্জিত হয়েছে।

তেরোখাদিয়া এলাকার প্রবীণ সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান পরিবারসহ বিছানার উপরে আশ্রয় নেওয়ার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত শতকের আশির দশকের পর এত ভারী বৃষ্টি আর দেখিনি। আমাদের এলাকার অন্তত ৫০টি বাড়িতে পানি ঢুকেছে।'

জমে থাকা পানিতে জাল ফেলে মাছ ধরতে দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বর্ণালী মোড়ে জলাবদ্ধ রাস্তায় স্থানীয়রা নৌকা চালাচ্ছেন।  

আরও কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে শহরের রাস্তায় স্থানীয়রা মাছ ধরছেন। 

এই প্রতিবেদক অটোরিকশায় প্রায় ৩ ঘণ্টা ঘুরে দেখেন লক্ষ্মীপুর, কাজিহাটা, ঘোষপাড়া এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। এসব এলাকায় গত ১০ বছরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সড়কও পানিতে তলিয়ে গেছে। 

তবে শালবাগান ও সাহেব বাজারসহ যেসব এলাকায় স্বাভাবিক বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিত, সেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি।

তেরখাদিয়া এলাকায় বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ছবি: আনোয়ার আলী/স্টার

২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে রাজশাহী সিটি করপোরেশন উল্লেখ করেছে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর ড্রেনেজ অবকাঠামো এবং অন্যান্য উন্নয়ন মূলক কাজের উন্নয়ন করা হয়েছে। 

যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সেলিম রেজা রঞ্জু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অতিবৃষ্টির কারণেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। আর বৃষ্টি না হলে দ্রুতই পানি নেমে যাবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা পানি নিষ্কাশনের উন্নত ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি। অসচেতনতার কারণে এবং যত্রতত্র আবর্জনা ফেলায় কিছু এলাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ আটকে পড়ে। সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করা হয়েছে, দ্রুতই পানি নেমে যাবে।'

স্থানীয় আবহাওয়া অফিস ২০২১ সালের ২১ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১১১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। ২০১৭ সালের ১৩ জুলাই ১০৭ মিলিমিটার ও ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে।

জেলার গ্রামাঞ্চলে বৃষ্টির কারণে আবাদি জমি তলিয়ে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, নগরীর শহরতলী ও আশেপাশের গ্রামগুলোতে অনেক সবজি খেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সবজি চাষিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh vs Vietnam RMG exports

Can Bangladesh fend off Vietnam in RMG race?

Bangladesh's limited trade diplomacy, coupled with its slower shift towards value-added production, could allow Vietnam to surpass it in global rankings

10h ago